দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে টাঙ্গাইল জেলার শাবাজ নগর গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পিংনা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স, ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এফএ এবং কলকাতার সেন্ট পলস সিএম কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। পরে তিনি প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি আইন বিষয়েও ডিগ্রি লাভ করেন।
ইব্রাহীম খাঁ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে করটিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খাঁ পন্নীর অর্থসাহায্যে করটিয়া সাদত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে ইব্রাহীম খাঁ এর প্রথম প্রিন্সিপাল নিযুক্ত হন। মাঝে কিছুকাল তিনি ময়মনসিংহে ওকালতি করেন। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইব্রাহীম খাঁ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি একাধিকবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বঙ্গীয় আইন সভার সদস্য এবং ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭-১৯৭১ পর্যন্ত তিনি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং ১৯৪৮-১৯৫২ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ছিলেন।
একজন কৃতবিদ্য লেখক হিসেবেও ইব্রাহীম খাঁর খ্যাতি ছিলো। তিনি বিভিন্ন লেখায় মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণের কথা বলেছেন। নাটক, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনী ও স্মৃতিকথা মিলে তার গ্রন্থসংখ্যা ২১টি।
সেগুলোর মধ্যে কামাল পাশা, আনোয়ার পাশা, ঋণ পরিশোধ , আলু বোখরা, ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র, বাতায়ন, ব্যাঘ্র মামা এবং বেদুঈনদের দেশে প্রধান। তার স্মৃতিকথা বাতায়ন সমকালের মুসলিম সমাজের একটি বিশবস্ত দলিল হিসেবে বিবেচিত। তিনি ব্রিটিশ আমলে ‘খান সাহেব’ ও ‘খান বাহাদুর’ এবং পাকিস্তান আমলে ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ উপাধি লাভ করেন। নাটকে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং সাহিত্যের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।