রাজবাড়ী সদর উপজেলায় প্রেমে বাধা দেয়ায় মাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে নবম শ্রেণিপড়ুয়া এক কিশোরীর বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের আগমাড়াই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হতভাগ্য জননীর নাম নাজনীন আক্তার (৪৫)। তিনি আগমাড়াই গ্রামের রিকশাচালক মান্নান মৃধার স্ত্রী। তাঁদের অভিযুক্ত মেয়েকে (১৫) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জেলা শহরের নবম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল করিম জানান, মেয়েটির সঙ্গে তার খালোতো ভাই মাসুদের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। গত শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে সে তার এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে মোবাইল ফোনে প্রেমিক মাসুদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে। ওই সময় মোবাইল ফোনে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যার দিকে মেয়েটি মন খারাপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে। সে সময় তার মা তাকে এ নিয়ে বকাঝকা করেন এবং এ সম্পর্ক ছাড়তে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় মেয়ে। একপর্যায়ে সে ঘরের দরজা আটকে বঁটি দিয়ে মাকে মাথা, কপাল ও হাতে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে আহত নাজনীনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাঁকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে স্বজনরা তাঁকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দেয়। পথে মানিকগঞ্জ এলাকায় পৌঁছলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাজনীন অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই মারা যান। সেখান থেকে নাজনীনের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরে স্বজনরা। নাজনীন এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী।
মেয়েটির চাচাতো ভাই জালাল মৃধা বলেন, তাঁদের এক চাচাতো ভাই আসলাম মৃধার বিয়ে ছিল গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। মা নাজনীন ও তাঁর মেয়ে ছাড়া পরিবারের সবাই ওই বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জেলা শহরের ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি এলাকায় কনের বাড়িতে যায়। এরই মাঝে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে তাঁরা জানতে পারেন নাজনীন আক্তার গুরুতর আহত। পরে তাঁরা রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় নাজনীনকে দেখতে পান।