ফাঁস প্রশ্নপত্রে শত শত শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ১৬ বছরে ১০ বার ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শত শত শিক্ষার্থীকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকায় সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া এই তথ্য জানান। মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার ১২ ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৩০ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—ময়েজ উদ্দিন আহমেদ, সোহেলী জামান, মো. আবু রায়হান, জেড এম সালেহীন ওরফে শোভন, মো. জোবাইদুর রহমান ওরফে জনি, জিলুর হাসান ওরফে রনি, ইমরুল কায়েস ওরফে হিমেল, জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে মুক্তার, রওশন আলী ওরফে হিমু, আক্তারুজ্জামান তুষার, জহির উদ্দিন আহমেদ ওরফে বাপ্পী ও আব্দুল কুদ্দুস সরকার। সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তার ১২ ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক আছেন।

সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রশ্নপত্র ফাঁস-সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে জসীম উদ্দীন ও মোহাম্মদ সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূল হোতা ছিলেন জসীম। তাঁর খালাতো ভাই সালাম স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রেসের মেশিনম্যান। তাঁরা আদালতে ৬৪ ধারার জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতে সবশেষ গ্রেপ্তার ১২ জনের নাম আসে। তাঁরা পলাতক ছিলেন। অবশেষে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলো।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ২০০১ থেকে পরবর্তী ১৬ বছরে চক্রের সদস্যরা ১০ বার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। শিক্ষিত লোকজন এই চক্রে জড়িত। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তাঁরা বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনেক ব্যাংক চেক ও পরীক্ষার প্রবেশপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। চক্রের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার ১২ জনের মধ্যে দুজন স্বামী-স্ত্রী। তাঁরা হলেন—ময়েজ উদ্দিন আহমেদ ও সোহেলী জামান। ময়েজ প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা। তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরে ফেইম নামের কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁস চক্রে জড়ান। কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তিনি অবৈধভাবে শত-শত শিক্ষার্থীকে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছেন। তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস ও মানিলন্ডারিং উভয় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ময়েজ ছাত্রশিবিরের নেতা ছিলেন। পরে তিনি জামায়াতের চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি পান। তাঁর স্ত্রী সোহেলীও এই চক্রের সদস্য। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ফেইম কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে ময়েজের সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে যুক্ত হন। সোহেলী জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক।

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে। 

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের - dainik shiksha ‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক - dainik shiksha পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন - dainik shiksha প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028588771820068