বাল্যবিবাহফুলবাড়ীতে ৯৯ ছাত্রী পরীক্ষায় বসছে না

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

চলতি জেএসসি, জেডিসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় ফুলবাড়ী উপজেলার ৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে ৯৯ জন ছাত্রী অনুপস্থিত রয়েছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এদের বেশির ভাগই বাল্যবিবাহের শিকার। তাদের সহপাঠীরা মনের আনন্দে পরীক্ষায় অংশ নিলেও বাল্যবিবাহের কারণে ওইসব কোমলমতি শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ছিটকে পড়েছে । উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম জানান, চলতি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় উপজেলার ৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।

এদের মধ্যে ৯৯ জন বালিকা এবং ৪১ জন বালক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ধরলা নদীবেষ্টিত ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা ফুলবাড়ী উপজেলায় বাল্যবিবাহের প্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারণা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও থামছে না তার রাহুগ্রাস। গত ৬ই মাসেই শুধু বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩ জন শিশু শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।

আফিনা, মৌসুমী, হাসনা মুছুল্লিপাড়া বালিকা দাখিল মাদরাসা, শাহিনা, শাহনাজ পারভীন ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আতিকা খাতুন দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রুজিনা, সেলিনা, মোকছিদা খাতুন বালারহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থী।

ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও শাহবাজার এএইচ ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষাকেন্দ্রে তাদের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠানের টেবিলে পড়ে থাকলেও পরীক্ষার্থীর খোঁজ রাখেনি কেউ। পরীক্ষা কক্ষের বেঞ্চে তাদের রোল বসানো থাকলেও এদের অধিকাংশই রয়েছে স্বামীর সংসারে।

উপজেলার কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের জাবেদ আলী, কুরুষা ফেরুষা গ্রামের খলিলুর রহমান, পূর্ব-ফুলমতি গ্রামের মোকলেছ আলী জানান, তাদের মেয়ে জেএসসি পরীক্ষার্থী। জামাই ভালো পেয়েছেন, তাই বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ফুলবাড়ী জছি মিঞা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব আবেদ আলী খন্দকার জানান, তার কেন্দ্রে ৪৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। হয়তোবা তারা স্বামীর সংসার করছে।

শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব জামাল উদ্দিন বিএসসি বলেন, এবারের জেএসসি পরীক্ষায় আমার কেন্দ্রে ২১ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। শুনেছি এদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে।

ইউএনও মোছা. মাছুমা আরেফিন জানান, অভিভাবকদের সচেতনতা না থাকায় বাল্যবিবাহ হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033330917358398