কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘জীবন বড় না, ভিআইপি বড়? এভাবে আর কত?-এ স্লোগানে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান- মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ গুরুতর আহত হয়। ওই সময় তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) সম্বলিত একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম-সচিব আবদুল সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন তাই ওই ফেরিকে অপেক্ষা করার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।
তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মাঝপদ্মায় অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় স্কুলছাত্র তিতাস।
পরিবারের অভিযোগ, তিতাসকে বাঁচাতে তারা ফোন করেন জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ। সাহায্য চান ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরও। কিন্তু কারও অনুরোধই রাখেননি ঘাট কর্তৃপক্ষ।
তিতাস ঘোষের চাচাতো বোন কেয়া ঘোষ জানান, কাঁঠালবাড়ি ফেরী ঘাট থেকে ১ ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়া যায়। কিন্তু তিন ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এতে সময় মতো তিতাসকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় ফেরিতে মারা যায় তিতাস। ওই সময় ফেরি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশসহ অনেককেই অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কেউই আমাদের কথা শুনেনি। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তিতাস ঘোষ মারা যায়। আমরা এর বিচার চাই।
তিতাস ঘোষ নড়াইলের কালিয়া থানার কালিয়া পৌর এলাকার মৃত. তাপস ঘোষের ছেলে। সে কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।