ফের বাড়তে পারে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আগামী মাসে আরও ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ক্রমান্বয়ে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। সরকারি সূত্রেই এ আভাস পাওয়া গেছে। এদিকে চলতি মাসেই গ্যাসের দামও বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। কিন্তু লোকসান পূরণে এই বৃদ্ধি খুব বেশি নয়। তাই আগামী মাসেও বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে।

সূত্রমতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে ভর্তুকি হ্রাসের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে নিত্যপণ্য, শিল্প, পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বেসরকারি কেন্দ্র ও আমদানি করা বিদ্যুৎ বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করায় প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। সিস্টেমলসের নামে শত শত কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়। এই লোকসান মেটাতে সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নেয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। ২০২১-২২ অর্থবছরে পিডিবি ভর্তুকি চেয়েছিল ২৯ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করেছে ১৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) জন্য পিডিবি ভর্তুকি প্রাক্কলন করেছে ৪৪ হাজার ২০ কোটি টাকা। সরকার চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ রেখেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

লোকসান পোষাতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম (সাধারণ গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য নয়) ১৯.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে। এরপরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির আবেদন করে ৬ বিতরণ কোম্পানি। 

তাদের আবেদনের ওপর গত ৮ জানুয়ারি গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির বিশ্নেষণে বলা হয়, পাইকারি দাম বৃদ্ধির ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর যে বাড়তি ব্যয় হবে তা পোষাতে ৮ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এ জন্য কমিটি ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করে। বিইআরসির আদেশ ঘোষণার আগেই তাড়াহুড়া করে গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ব্যাখ্যায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, 'ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। তবে পিডিবির লোকসানের তুলনায় দাম সামান্য বেড়েছে।

আগামী মাসগুলোতে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়বে কিনা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করেননি আবার অস্বীকারও করেননি। তিনি বলেন, আগামীর বিষয় আগামীতে জানা যাবে। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না।

গ্যাসের দাম: গত ৫ জুন গ্যাসের দাম ২২ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়। এর পরও এ খাতে লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছে পেট্রোবাংলা। তাই চলতি মাসেই নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম আরেক দফা বাড়ানো হতে পারে বলে সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং জ্বালানি সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, তিনি এই দায়িত্বে নতুন এসেছেন। এখনও বিষয়গুলো পুরোপুরি জানা নেই তাঁর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052909851074219