সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যক্তি পর্যায়ে বিজ্ঞাপন বাবদ সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একক ব্যক্তি হিসেবে দেশে আর কেউ এর চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেন না। ফেসবুকের ‘অ্যাড লাইব্রেরি’ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
‘অ্যাড লাইব্রেরি’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু বিশেষ পেজ সম্প্রতি বিজ্ঞাপনে ব্যয় বাড়িয়েছে। এসব পেজ থেকে বিতর্কিত ও সমালোচিত বিভিন্ন বিষয়ে সম্প্রতি নানা পোস্ট দেয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বাবদ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৫ জুলাই পর্যন্ত জুনাইদ আহমেদ পলক ২৬ হাজার ৮৬৩ ডলার ব্যয় করেন। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের ব্যয় ৩৭ হাজার ৪৩০ ডলার।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘রূপগঞ্জের কথা’, ‘ভালোর পথে’, ‘সফল বাংলাদেশ’, ‘আমার নেত্রী আমার অহংকার’, ‘প্রজন্মের আওয়াজ’, ‘আহ্বান’, ‘নৌকা মানেই’, ‘বিডি পিপল ভয়েস’-এর মতো কয়েকটি পেজ থেকে সম্প্রতি মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হয়।
সর্বশেষ ৯০ দিনের ব্যয়ের হিসেবে ‘রূপগঞ্জের কথা’, ‘প্রজন্মের আওয়াজ’, ‘পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স লিমিটেড’, ‘জুনাইদ আহমেদ পলক’, ‘ডেইলি নিউজ’ প্রথম সারির তালিকায় ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ের ব্যয়ে ‘আহ্বান’, ‘আমরাই বাংলাদেশ’, ‘ভালোর পথে’, ‘দুশমন’, ‘আমার দেশ আমার অহংকার’, ‘আবার দশ ট্রাক’, ‘বিডিনিউজ ইনসাইডার’-এর মতো কিছু পেজে বিজ্ঞাপন ব্যয় বেড়ে গেছে। এসব পেজ ঘুরে দেখা যায়, কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে নানা পোস্ট দেয়া হচ্ছে। এসব পোস্টকে আবার বুস্টও করা হচ্ছে।
রাজনীতিকরাও সম্প্রতি ফেসবুকে বুস্ট করছেন বেশি। এর মধ্যে রয়েছেন মাহমুদ হাসান রিপন, সালমা ইসলাম এমপি, এমএ রাজ্জাক খান রাজ সিআইপি ইত্যাদি।
এদিকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও ফেসবুক বিজ্ঞাপনে নজর বাড়িয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি), বিএনপি মিডিয়া সেল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ মিডিয়া সেল ইত্যাদি পেজের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে দলগুলো।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব পেজে দেয়া পোস্টগুলোর বিপরীতে বুস্ট করতে প্রায় ১০০ ডলারের মতো খরচ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হচ্ছে। সবচেয়ে কম অর্থ ব্যয় হচ্ছে বরিশাল ও রংপুর বিভাগে।
১৮ জুলাইয়ের পর দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকলেও ২৩ জুলাই থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালুর পরপরই প্রতিমন্ত্রী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। তিনি প্রতিনিয়তই নিজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্য নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে আসছেন। এছাড়া বিভিন্ন আয়োজন সরাসরি সম্প্রচারও করছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামেও তিনি সক্রিয়। এছাড়া তার ভেরিফায়েড টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকেও তিনি পোস্ট করছেন। রোববার বিটিআরসিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘গুজব প্রতিরোধে মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়। তিনিসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোও এভাবে সক্রিয় থাকতে পারবে।’