টানা ১০ দিন পর রোববার বিকেলে তিনটার পর মোবাইলে ফোর জি ইন্টারনেট চালু হয়েছে। তবে দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত চারটি সামাজিক মাধ্যম মোবাইলে এখনই চালু হচ্ছে না। মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ এবং বাইটড্যান্সের প্ল্যাটফর্ম টিকটক বন্ধ থাকবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মোবাইলে ইন্টারনেট চালুর বিষয়টি জানান। তবে ফোর-জি নেটওয়ার্কে কোন কোন অ্যাপ থাকবে জানতে চাওয়া হলে প্রতিমন্ত্রী নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
মোবাইল অপারেটর ও বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে অপারেটরদের ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন বার্তা আদান প্রদানের অ্যাপ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এক ও তিন দিনের ডেটা প্যাকেজ করার ব্যাপারেও বলা হয়েছে।
গত ২৩ জুলাই থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাওয়া গেলেও সেখানে ফেসবুক, টিকটক বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপেও বার্তা আদান-প্রদানে অসুবিধা দেখা যাচ্ছে। তবে ইউটিউব চলছে।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউনের সহিংসতায় ডাটা সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হলে গত ১৮ জুলাই রাতে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
অ্যাপ চালুর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট করে কোনো অ্যাপ্লিকেশনের কথা বলছি না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশনা ও পরামর্শক্রমেই প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। তাদের যখন যেখানে যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হচ্ছে একসঙ্গে কাজ করছি সহযোগিতা দিতে। কোনো নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনের কথা উল্লেখ করতে পারছি না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার সম্পূর্ণভাবে কখনোই কোনো অ্যাপ বন্ধ করেনি। এটা নির্ভর করছে তাঁদের (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী) আচরণের ওপর। তাঁরা যদি দেশের আইন সংবিধান ও নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীল আচরণ করে তাহলে বাংলাদেশে সবার সহযোগিতা পাবে।
অনেকেই অনেকভাবে অনেক অ্যাপ ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। ভিপিএন ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে এগুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান তিনি।
ফোর-জিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালু প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটককে গতকাল শনিবার চিঠি দেওয়া হয়েছে বিটিআরসি থেকে। চিঠিতে গত এক মাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংসতা ও গুজব ছড়িয়ে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সেগুলো সরাতে অনুরোধ করা হয়েছে। যতটুকু সরানো হয়েছে তা নগণ্য ও অগ্রহণযোগ্য। আইন মেনে তাঁরা বাংলাদেশে সাইবার জগৎ ব্যবহার করতে চায় কিনা সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থনে কাজ করত এমন ৫০টি পেজ ও অ্যাকাউন্ট ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু একই ধরনের কাজ বিএনপির পেজ থেকে বা সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া যেসব কনটেন্ট প্রচার করছে সেগুলো কেনো বন্ধ করছে না। আবার শিশুদের অ্যাবিউজ, নারীদের প্রতি আক্রমণ, সহিংসতা, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, গুজব প্রসঙ্গে তারা কোনো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেনি।
তিনি আরো বলেন, আগামী ৩১ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ঢাকায় এসে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা যুক্তি ও ব্যাখ্যা দিয়ে যদি বোঝাতে পারে যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করছে না তাহলে আলোচনার ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।