দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি : লেখক-প্রকাশক ও পাঠকের প্রাণের বইমেলার তৃতীয় দিনে দর্শক সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি বিক্রি। প্রকাশকরা বলছেন, ছুটির দিন হিসেবে গতকালের তুলনায় বিক্রি কম হচ্ছে । তবে সামনের দিনগুলোতে বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের।
শনিবার (৩ ফেব্রয়ারি) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে মেলা প্রাঙ্গণে বেশ লোক সমাগম লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন স্টলে নিজের পছন্দের লেখকের বই কিনতে ভিড় করছেন বই প্রেমীরা।
ছুটির দিনে দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বই বিক্রি বাড়েনি, বলছেন প্রকাশকরা। পুঁথিনিলয় প্রকাশনীর সুলতান মাহমুদ শুভ বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কিছু বই বেশি বিক্রি হচ্ছে । কাঙিক্ষত বই বিক্রি হচ্ছে বলা চলে । আমি বলবো, পাঠকরা মাত্র আসা শুরু করেছে । সামনের দিনগুলোতে বই বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা রাখছি। আমাদের স্টলে রবিন্দ্রনাথের শেষের কবিতা, মোহাম্মদ আমীনের লেখা প্রমিত বাংলা বানানের বই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চলছে।
বাংলা একাডেমির স্টলের মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ছুটির দিন হিসেবে বিক্রয় কমই ছিলো । সবচেয়ে বেশি বিক্রিয় তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ভাষার অভিধান, গল্প, শিশুদের গল্পের বইগুলো । তবে এখনো বই মেলা জমজমাট হয়নি।
অন্যধারা প্রকাশনীর মাহবুব হোসেন বলেন, গতকালের তুলনায় বিক্রি কম। বিক্রর মধ্যে সাদাত হোসেনের লেখা ‘তোমার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম বলে’ এবং ইলমা বেহরোজের লেখা ‘পদ্মজা’ বই দুটি বেশি বিক্রি হচ্ছে ।
জিনিয়াস পাবলিকেশনের মশিউর রহমান বলেন, ছুটির দিন হিসেবে গতকালের তুলনায় বই বিক্রি কমেছে। আমাদের অনুরোধ বই, নির্দিষ্ট হরোর বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বই মেলায় সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে শিশু চত্বরে । ছুটির দিন হিসেবে সকাল থেকেই হালুম,টুকটুকি, শিকুদের নিয়ে মেতেছিলো চত্বরটি। দুপুরে শিশু প্রহরের পরে সারাদিন সিসিমপুর মঞ্চে চালু ছিলো শিশুদের নিয়ে নানা আায়োজন। শিশু চত্বরে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের বই নিয়ে স্টল সাজিয়েছে ডাক প্রকাশনী। প্রকাশনীতে বই বিক্রিতে ব্যস্ত থাকা অন্তর জানায়, ছুটির দিন হিসেবে বেশ জমেছে মেলা। শিশুদের অঙ্কন বই, সাধারণ জ্ঞানের বইসহ রং-বেরংয়ের বর্ণের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে । তবে শুক্রবারের তুলনায় বই বিক্রি কম বলেও জানান এই বই বিক্রেতা ।
আজ নতুন বই এসেছে ৭৪টি। মেলায় বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘দ্বিশত জন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিকউল্লাহ খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন খসরু পারভেজ এবং হোসনে আরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুহম্মদ নূরুল হুদা।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক সালেহা চৌধুরী, লালন গবেষক আবু ইসহাক হোসেন এবং কবি ও প্রাবন্ধিক মামুন মুস্তাফা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি নাসির আহমেদ, তারিক সুজাত, শাহনাজ মুন্নী এবং নাহার মনিকা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মিলন কান্তি দে, শাহাদাৎ হোসেন নিপু এবং আফরোজা কণা।
এ ছাড়া ছিলো ঝর্ণা আলমগীরয়ের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং লক্ষ্মীকান্ত হাওলাদার-এর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শেখ রাসেল ললিতকলা একাডেমি’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সাজেদ আকবর, সালমা আকবর, লাইসা আহমেদ লিসা, অনুরাধা মণ্ডল, মুহা. আব্দুর রশীদ, সঞ্চিতা রাখি এবং পাপড়ি বড়ুয়া।
আগামীকাল রোববার মেলা শুরু বিকেল ৩টায়। মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।