ছাগলনাইয়ায় ২৬ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত উচ্চ বিদ্যালয়টি চালু করতে চান এর প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন ভূঁইয়া। এক সময় বিদ্যালয়টি চালু করতে বহু বাধার সম্মুখীন হন তিনি। একপর্যায়ে হাল ছেড়ে দিলেও বর্তমানে বিদ্যালয়টি চালু করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু কারও সাড়া না sপেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন মুক্তিযোদ্ধা জহির।
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ছাগলনাইয়া উপজেলার ৯নং শুভপুর ইউনিয়নের জয়চাঁদপুর গ্রামের আট শতক জায়গা কিনে আট কক্ষবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন ভূঁইয়া। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ২৫ শিক্ষার্থী নিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা জহির বলেন, সিরাজুল আলম মজুমদার, জয়নাল আবেদীনসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় বিদ্যালয় কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা চালাই। বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় এর নামের বিদ্যালয়টির অনুমোদনের জন্য ফাইল নিয়ে ঢাকায় গেলে তারা জানায়, এলাকায় এলে আমার ওপর হামলা করা হবে। এর পরও বাধা ডিঙিয়ে এলাকায় এলে কিছু দুস্কৃতকারী আমাকে ধাওয়া করে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এলাকায় ঢুকতে না পারায় ২৫ শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়টির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। তালাবদ্ধ স্কুলটি ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ঝড়ে কবলে পড়লে এলাকার কিছু লোক স্থাপনাসহ টেবিল চেয়ার লুট করে নিয়ে যায়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে বিদ্যালয়টি ফের চালু করতে উদ্যোগ নিই। কিন্তু দলটির স্থানীয় নেতাদের অসহযোগিতার কারণে সম্ভব হয়নি। ফলে বিদ্যালয়টি আলোর মুখ দেখেনি। ফের বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে বিদ্যালয়ের জন্য কেনা জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।
মুক্তিযোদ্ধা জহির আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন বিএনপিদলীয় এমপি ওয়াদুদ ভূঁঞার আদি নিবাস ছাগলনাইয়ায়। তার বাহিনী তাকে আত্মীয়স্বজন মারা যাওয়ার পরও এলাকায় ঢুকতে দেয়নি। তিনি চাননি ছাগলনাইয়ায় বঙ্গবন্ধুর নামে কোনো স্কুল হোক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা ওয়াদুদ ভূঁঞা জানান, ওই সময়ে ছাগলনাইয়ার এমপি ছিলেন সাঈদ এস্কান্দার। তার বিরুদ্ধে জহির যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট। ওয়াদুদ ভূঁঞা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ওই সময়ে জহির বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে স্কুল করার নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা নিয়ে নিজেদের লোকজনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম থমকে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, জয়চাঁদপুর গ্রামের ৬ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। এলাকার সচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েরা ৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বল্লভপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে পড়ালেখা করছে। পরিবহনের সুব্যবস্থা না থাকায় বখাটেদের উৎপাতের কারণে বাধ্য হয়ে অনেক অভিভাবক মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে বাল্যবিয়ে দেন। তাই এখানে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলে এলাকাবাসীর উপকার হবে।