দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : রাজধানীর ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বহন করা ফ্লাইটটি অবতরণ করে। এরপর তাকে শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে তিনি রাজধানীর ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
বিমানবন্দরে ভুটানের রাজাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এখন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল বন্ধুরাষ্ট্র ভুটান। সময়ে-অসময়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো দেশটির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আবারও এলেন বাংলাদেশে। প্রায় এক যুগ পর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন ভুটানের রাজা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক চার দিনের বাংলাদেশ সফর এসেছেন মূলত স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে। এর পাশাপাশি উচ্চপর্যায়ের বেশ কয়েকটি বৈঠকেও অংশ নেবেন তিনি।
এই সফরে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন ভুটানের রাজা। স্বাক্ষর হতে পারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগসহ অন্তত তিনটি সমঝোতা স্মারক।
সবশেষ ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা সফর করা ওয়াংচুক এবারও এলেন রানি জেতসুন পেমাকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের পর এটিই কোনো দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সফর, যেখানে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি, বাণিজ্য, পর্যটন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পেতে পারে। এ ছাড়া তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং একটি সমঝোতা নবায়ন হতে পারে বৈঠকে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ২৬ মার্চ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাজা নামগিয়েল ওয়াংচুক। সেখান থেকে ফিরে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন তিনি। এছাড়া বিকেলে যোগ দেবেন বঙ্গভবনের আনুষ্ঠানিকতায়।
২৭ মার্চ সকালে ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাবেন। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপান-বাংলাদেশের যৌথ ব্যবস্থাপনার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন তিনি। ঢাকায় ফিরে বিকেলে বসবেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
তবে রানি জেতসুন পেমা পুরো সফরে থাকছেন না রাজার সঙ্গে। ২৭ মার্চ রাজাকে রেখেই বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন তিনি।
সফরের চতুর্থ দিন ২৮ মার্চ বিমানে সৈয়দপুর যাবেন রাজা। সেখান থেকে সড়কপথে কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন তিনি। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের টার্গেট এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ভুটানি বিনিয়োগের জন্য ছেড়ে দেয়া। এটি সম্ভব হলে ভুটানের সীমান্ত শহর ফুন্টসলিংয়ের সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। খুলে যাবে ত্রিদেশীয় বাণিজ্যের নতুন দুয়ার।
ওই দিন বিকেলেই বাংলাদেশের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম হয়ে ভুটান ফিরে যাবেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।