রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে নামিদামি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিড় ও জমি নিয়ে জটিলতায় অস্তিত্ব শঙ্কায় ছিলো স্কুলটি। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের সরকারি করা স্কুলটি গত এক দশক চলেছে অপর একটি প্রতিষ্ঠানের ‘পরগাছার’ মতোই। যেনো নিজভূমে পরবাসী ছিলো এতো দিন। তবে অবশেষে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে স্কুলটি। হচ্ছে ছয় তলা ভবন। জমি দখল-বেদখল ও দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে অস্তিত্ব ফিরে পাচ্ছে স্কুলটি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় স্কুলে ছয়তলা নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ২৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এলজিইডির তত্ত্বাবধায়নে এ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক দশক ধরে গাইড হাউস ক্যাম্পাসের এক কোণায় জীর্ণ ছাপড়ায় স্কুল চালাতে কষ্ট হচ্ছিলো। সেখানে যে একটি স্কুল আছে সেটিই অনেকে জানতেন না। অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছলদের এলাকা হিসেবে পরিচিত বেইলি রোডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় বেশি। তাই ওই এলাকার অস্বচ্ছল পরিবারের শিশু শিক্ষার্থীদের অন্যতম ভরসা ওই স্কুল। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত স্কুলটি ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধুর সরকার অধিগ্রহণ করলেও গার্লসগাইড কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে স্কুলের জমির মালিকানা দাবি করে। পরে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে জমির মালিকানা নিশ্চিত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এদিকে গার্লস গাইডের কর্মচারীদের দাবি, এ স্কুলে খুব বেশি শিক্ষার্থী নেই। এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের আশপাশের সরকারি প্রাথমিক স্কুলে বদলি করে স্কুলটি বিলুপ্ত ঘোষণা করলেই ভালো হতো।
প্রতিষ্ঠানটির জমি ফিরে পাওয়ার সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন প্রবীণ শিক্ষক নেতা ও বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাতে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রায় এক দশক আগে স্কুলটির জমি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তখন আমরা জমি ফিরে পেতে মানববন্ধন-সভা-সেমিনার
করেছি। পরে তৎকালীন থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে জমি ফিরে পেতে মামলা করেছিলেন। সে মামলার রায় স্কুলের পক্ষে আসে। জীর্ণ ছাপড়ায় স্কুল চালাতে শিক্ষকদের খুবই কষ্ট হতো। অবশেষে ভবন পাচ্ছে স্কুলটি। স্কুলটিতে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।