১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেনেড হামলার সময় মানবাধিকার কোথায় ছিলো বলে প্রশ্ন রেখেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমাদের সুশীল সমাজের বিশাল অংশ মানবতার কথা বলে। বিভিন্ন দেশ এসে যখন মানবাধিকারের কথা বলে তখন তারা সঙ্গ দেয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে তাদের কথা নেই। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেনেড হামলা নিয়ে কথা নেই। সেই সময় মানবাধিকার কোথায় ছিল? ২০১৩-১৪ খ্রিষ্টাব্দে পুড়িয়ে মানুষকে হত্যা করা হলো, পঙ্গু করে দেয়া হলো। এতে কারো মানবাধিকার নিয়ে কথা নেই, এটা কারো চোখে পড়লো না।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘ষড়যন্ত্রের উৎপাটনই শোকাবহ আগস্টের অঙ্গীকার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজও আমরা যখন কোনো নতুন উদ্যোগ নিতে যাই তখন দেখি, স্বাধীনতার পরে মাত্র তিন বছর সময়ে বঙ্গবন্ধু সেটা করেছেন। সারাজীবনে বঙ্গবন্ধু কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেননি। ধাপে ধাপে সবকিছু করেছেন। পুরো দেশকে এগিয়ে নেয়ার পথরেখা তৈরি করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ষড়যন্ত্র আজও চলছে। তার বড় প্রমাণ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর পিলখানায় বিডিআরের ঘটনা ঘটানো হলো। সেনাবাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিলো। সব ষড়যন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হচ্ছে। একটি বাড়ি, একটি খামার, সবুজ কৃষি, কেউ আশ্রয়হীন থাকবে না। শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা কাজ করে চলেছেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ঘাতকেরা পঁচাত্তরের পনের আগস্ট আমাদের অস্তিত্ব, সত্তা, স্বকীয়তা, আইডেনটিটি এবং সব দুঃখ মোচনের প্রধান আশ্রয় প্রবাদ পুরুষ পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তাদের সংকীর্ণ ও লোলুপ দৃষ্টি সেদিন শুধু এইটুকু বুঝতে পারেনি, বাংলাদেশের বুক জুড়ে বঙ্গবন্ধুর নাম যেভাবে লিপিবদ্ধ করা আছে, বুলেটে তা মোছা যায় না। বরং গোটা বাংলাদেশ চিরকাল পিতা হত্যাকারীকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেই চলবে। আর বঙ্গবন্ধু চেতনায় চিরভাস্বর হয়ে রইবেন বাংলাদেশ ও বিশ্ববুকে।
ঢাবি অধ্যাপক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, ঢাবি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, কলামিস্ট মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.), বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।