সুন্দরবনের মধু আহরণে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও এর ভৌগলিক নির্দেশক সনদ-জিআই পেয়েছে ভারত। এতে ক্ষুব্ধ সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ ও বিপণন কাজে নিয়োজিতরা। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলাকে দুষছেন তারা। যদিও বন বিভাগ বলছে, সুন্দরবনের খলিসা ফুলের মধুর জিআই সনদের জন্য আবেদন করবে তারা।
১০ হাজার বর্গকিলোমিটারে ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ হাজার ৫১৭ বর্গকিলোমিটার। বাকিটা ভারতে। শুধু আয়তনে নয়, বন থেকে মধু সংগ্রহেও এগিয়ে বাংলাদেশ। গত বছর ৪০০ টন মধু আহরণ হয়েছে। একই সময়ে ভারতে আহরণ হয়েছে ১৫৭ টন। সব দিকে এগিয়ে থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের বন উন্নয়ন করপোরেশনের আবেদনে, জিআই পণ্য হিসেবে সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ পেয়েছে ভারত।
মধু আহরণ ও বিপনন কাজে জড়িতরা বলছেন, এটি কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার ফল।
মধু নিয়ে গবেষণা করা ব্যক্তিরা জানান, এক বছর আগে বন বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জিআই সনদের চেষ্টা করেছিলেন। তবে নানা কারণে তা ভেস্তে যায়।
চট্টগ্রাম আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশর মধ্যে সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ পড়েছে এবং বাংলাদেশেই মধুটা বেশি সংগ্রহ হয়। আমরা পুনরায় যদি আবারও সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করি তাহলে আমরা ভালো কিছু পাবো।’
বন বিভাগ বলছে, খলিসা, গড়ান, কেওড়া, বাইন ও গেওয়া নামে পাঁচ ধরনের মধু পাওয়া যায় সুন্দরবনে। এর মধ্যে খলিসা মধু শুধুমাত্র বাংলাদেশে পাওয়া যায়। শিগগির এই মধুর স্বীকৃতি পেতে আবেদন করা হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবনে খলিসাসহ পাঁচ ধরনের মধু পাওয়া যায়। এর মধ্যে খলিসা মধু শুধুমাত্র বাংলাদেশে পাওয়া যায় আর আমরা এই মধুর স্বীকৃতি পেতে আবেদন করবো।’
সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ পেতে সরকারে যথাযথ পদক্ষেপ চান এই খাতে জড়িতরা।
জিআই সনদ হলো আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ। এ উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে পণ্যের ব্র্যান্ডিং, যা থাকলে ক্রেতারা সহজে বিশ্বাস করে এটি আসল পণ্য। এর আগে জামদানি শাড়ির পর স্বত্ব বা জিআই সনদ পেয়েছিলো ভারত।