বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে মারধর করে কক্ষের দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। শনিবার (০৪ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের আবাসিক নতুন হলের ২০০৭ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাখা ছাত্রলীগ।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর নাম লাইজু আফরিন। তিনি কলেজের ২০১৭-১৮ সেশনের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী। লাইজু এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুনকে অভিযুক্ত করেছেন। এসময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের আরও একাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাত ১১টার দিকে লাইজু জানান, তার কক্ষে আরও কয়েকজন মেয়ে রয়েছেন। তাদেরকে কক্ষ থেকে সরিয়ে সেখানে অন্য মেয়েদের রাখতে চান কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন। এজন্য সাইমুন তার (লাইজু) ব্যাগ ও জামা-কাপড় বের করে দিয়েছেন।
লাইজু বলেন, আমার ব্যাগ ও জামা-কাপড় বের করে দিয়ে আমার রুম দখল করার চেষ্টা চলছে। আমার রুমে তার (সাইমুন) মেয়েরা এখনো আছে। আমার রুমটা পুরো তছনছ করে ফেলছে। আমি ভিডিও করার সময় আমাকে ধাক্কাধাক্কি করে। মোবাইল নিতে চায়, কিন্তু নিতে পারে নাই।
তিনি বলেন, এসময় শাহিনা এবং তন্বীসহ আরও তিনজন আমাকে প্রথমে সজোরে ধাক্কা মেরেছে এবং মারধর করেছে। আমি হলের দোতলা থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছি, কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।
কলেজের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ০১ মার্চ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের জন্মদিন ছিলো। তার জন্মদিনকে ঘিরে এ ঘটনার সূত্রপাত। তার (সাইমুন) জন্মদিন উৎযাপনের জন্য তিনি হলে মেয়েদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছেন। ওই টাকা লাইজু দিতে না চাওয়ায় এবং এর প্রতিবাদ করায় তার উপর চড়াও হন শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী সাইমুন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, আমাকে ও আমার সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।
আজকে ক্যাম্পাসে কিছুই হয়নি। যে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে সে আমার হলের ছোট বোন। আমি তাকে কেন মারধর করতে যাবো? উপর থেকে কেউ হয়তো তাকে ইন্ধন জুগিয়েছে এমনটা করতে।জন্মদিনের বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, গত ০১ মার্চ আমার জন্মদিন ছিলো। সেখানে হলের ছোট বোনেরা নিজেরা টাকা তুলে আমাকে সারপ্রাইজ দিয়েছিল। ব্যাপারটা এর আগে আমার জানাই ছিলো না। পরে আমি উল্টো তাদের বকা দিয়েছি, এরকমটা করার কী দরকার ছিলো বলে। কিন্তু আমার জন্মদিনে আমি ২০ টাকা করে চাঁদা তুলে উৎসব করেছি, এ ধরনের কাজের তো প্রশ্নই আসে না।
এ বিষয়ে জানতে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক হোসনে আরা শেফালীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া নতুন হলের সুপার ও কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খুজিস্তা আক্তারা বানুর সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তার উভয়ের কাছ থেকেই তাৎক্ষণিক কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।