বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় গাইবান্ধার ৫৭ বিদ্যালয় বন্ধ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি |

মাঠে পানি ওঠায় গাইবান্ধার চার উপজেলার ৫৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।

নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকলেও ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ১৩ হাজার পরিবার ও ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ১৫শ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, মাঠে পানি ওঠায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে। এ কারণে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানসহ সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থাগিত রাখা হয়েছে।
“এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২৪টি, ফুলছড়িতে ১৩টি, সাঘাটায় ১৩টি ও গাইবান্ধা সদরে ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।”

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে গত দুই সপ্তাহে উপজেলার কাপাসিয়া, হরিপুর, বেলকা, শ্রীপুর, কঞ্চিবাড়ী ও চণ্ডিপুর ইউনিয়নে ১৪৫০পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

“গত কয়েকদিনে তিস্তার প্রবল স্রোতে ভাঙনের কবলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে সুন্দরগঞ্জের ভাটি কাপাসিয়া চরে সরকারি অর্থে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশিভাগ অংশ। এতে এই প্রকল্পে আশ্রয় পাওয়া ১৮০টি পরিবারের মধ্যে ৩৫টি গৃহহীন হয়েছে।”

ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহীদুজ্জামান শামীম বলেন, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে উপজেলার কঞ্চিপাড়া, ফজলুপুর, এরন্ডাবাড়ী, উড়িয়া ও গজারিয়া ইউনিয়নের ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ওইসব ইউনিয়নের ৪০০ পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে।

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী বলেন, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের ৮৪টি গ্রামের ১২ হাজার ৮১০টি পরিবারের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো বুধবার থেকে বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আগামী দুই এক দিনের মধ্যে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করবে। ভাঙনকবলিত এলাকায় জরুরি পদক্ষেপসহ সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুহুল আমীন বলেন, বন্যায় গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় ১৪৫০ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি কমলে এসব ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে পানি বাড়লে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, বন্যা ও নদী ভাঙনের কবল থেকে মানুষের জানমাল রক্ষা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026102066040039