বন্যায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক: |

করোনার কারণে দেড় বছর বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত কয়েক মাস ধরে পুরোদমে চলছিল ক্লাস। সেই ধারাবাহিকতায় স্কুলে-মাদ্রাসায় অর্ধবার্ষিক আর প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল। 

ঘোষণা ছিল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজনের। কিন্তু দেশের দুই অঞ্চলে চলমান বন্যা ফের ধাক্কা দিয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে বন্ধ আছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

আগামী এক মাসের মধ্যে এই পরীক্ষা শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই। আগস্টে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। এটিও অক্টোবরের আগে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১৫ জেলা বন্যাকবলিত। এগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে মধ্যাঞ্চলের আরও তিন জেলা। এগুলোর মধ্যে আবার সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা চলে গেছে পানির নিছে। বাকি জেলাগুলোর সব উপজেলা অবশ্য বন্যাকবলিত নয়।

জানা গেছে, এ কারণে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলায় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ডুবে যায়নি, এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আবার আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রায় ৯ দিন ধরে চলছে বন্যা।

কিন্তু এ কারণে কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত বা বন্ধ হয়ে গেছে সেই তথ্য সঠিকভাবে জানাতে পারেনি শিক্ষার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। তবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার মাউশির পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেন খানকে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্যের জন্য তিনি নিজেই সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ও উপপরিচালকদের ফোন দিচ্ছেন। তিনি জানান, তাদের কাছে এখনো তথ্য আসেনি। শনিবারও দপ্তর খোলা থাকবে। ওইদিনের মধ্যে তথ্য মিলবে বলে জানান।

অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল আমিন জানান, তাদের কাছে এ ব্যাপারে প্রাথমিক তথ্য আছে। বন্যার কারণে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিন্তু কতটি আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই তথ্য পানি নেমে যাওয়া পর্যন্ত জানা সম্ভব হবে না। তবে ১৩৫১টি স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মধ্যে অন্তত ১৩৪ উপজেলার স্কুল বর্তমানে বন্ধ আছে। এই তালিকায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার যুক্ত হয়েছে ফেনীর ফুলগাজী আর মানিকগঞ্জের দৌলতপুর। এসব উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কেননা, বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে লেখাপড়ার চেয়ে জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম বড় হয়ে আবির্ভূত হয়েছে।

অন্যদিকে সরকারি সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে আক্রান্ত জেলা-উপজেলার প্রায় সব বন্যামুক্ত হতে পারে। কিন্তু পানি নেমে গেলেই লেখাপড়া শুরু করা যাবে না দুই কারণে। প্রথমত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজনীয় দেখা দিতে পারে।

দ্বিতীয়ত, ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হয়ে যাবে। ঈদের ছুটি ১৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে। সেই হিসাবে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা এক মাসের বেশি লেখাপড়া থেকে দূরে থাকছে।

এদিকে এই একই বাস্তবতায় এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। ১৯ জুন পরীক্ষা শুরুর লক্ষ্যে সারা দেশে খাতা ও প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বন্যা তা শুরু করতে দেয়নি। আগামী ২২ আগস্ট এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর সূচি ছিল।

এখন জুলাইয়ের চতুর্থ সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষা শুরু করা গেলে তা শেষ হতে এক মাস লাগবে। সে ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চলে যাবে এইচএসসি পরীক্ষা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026969909667969