বন্যা ও এর পরবর্তী সময়ে শিশুকে সুস্থ রাখতে করণীয়

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে সাধারণত বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী সময়ে নানা রোগ দেখা যায়। এর মধ্যে পানি ও কীটপতঙ্গবাহিত রোগের সংখ্যা বেশি। বড়দের চেয়ে শিশুদের স্বাস্থ্যের অবস্থার বেশি অবনতি ঘটে এ সময়। বাড়ে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, চর্মরোগসহ নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

বন্যায় ময়লা-আবর্জনা, মানুষ ও পশুপাখির মলমূত্র-পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা একাকার হয়ে যায়। এসব উৎস থেকে জীবাণু বন্যার পানিতে মিশে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য বন্যায় সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার বেড়ে যায়।

এ সময় পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও সব কাজে নিরাপদ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, শিশুদের জন্য পুষ্টিকর শুকনো খাবার, ওরস্যালাইন ইত্যাদি উপাদানের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ ও বেটার লাইফ হসপিটাল চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্টের কনসালটেন্ট ডা. সেলিনা সুলতানা জানান, বন্যায় প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হলো ডায়রিয়া।

এর প্রতিরোধে খাবার আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। পায়খানা করার পরে হাত একইভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা শুরু হলে পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন খেতে হবে।

দু’বছরের কম বয়সী শিশুকে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০-১২ চা চামচ খাবার স্যালাইন দিতে হবে, ২-১০ বছরের শিশুকে দিতে হবে ২০-৪০ চা চামচ। ১০ বছরের বেশি বয়সী শিশুকে একটু বেশি দেওয়া হয়। খাবার স্যালাইন বা ওআরএস না থাকলে বিকল্প হিসেবে বাড়িতে প্রস্তুতকৃত লবণ-গুড়ের শরবত খাওয়াতে হবে।

তবে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। ভাতের মাঁড়, চিঁড়ার পানি, ডাবের পানি ব্যবহার করতে হবে। কিছু পাওয়া না গেলে শুধু নিরাপদ পানি খাওয়ানো যেতে পারে। যে বয়সের জন্য যে খাবার স্বাভাবিক, তা খাওয়ানো চেষ্টা করতে হবে। এ সময় শিশুর পুষ্টিহীনতা রোধে খিচুড়ি খাওয়ানো যেতে পারে।

অবস্থার উন্নতি না হলে, পাতলা পায়খানা ও বমির মাত্রা বেড়ে গেলে ও শিশুর পানিশূন্যতার ভাব দেখা গেলে, নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ এক্ষেত্রে শিশুর শিরাপথে স্যালাইনের প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিটি শিশুকে এ সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যেতে পারে।

বন্যা পরবর্তী সময়ে শিশুকে (দুই বছরের নিচের শিশু ব্যতীত) কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে। কৃমিনাশক ওষুধ নিয়মিতভাবে ৪-৬ মাস অন্তর খাওয়াতে হবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় স্বাভাবিক টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।

ভয়াবহ ও দীর্ঘমেয়াদি বন্যার সময় কারও কারও মানসিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে, শিশুদের মধ্যেও সমস্যা আসে। এক্ষেত্রে সবার সহমর্মিতা একান্ত প্রয়োজন। কোনো রোগব্যাধি বিস্তার লাভ করার আগেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সহায়তা প্রদান করতে হবে যাতে আমাদের শিশুরা নিরাপদে থাকে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053369998931885