বন্যা : ১১৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বন্যার প্রভাবে সারাদেশে ১১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে সাধারণ মানুষ। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (প্রশাসন) রুহুল মমিন।

তিনি বলেন, বন্যার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান জলের নীচে তলিয়ে গেছে। তবে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি থেকে মুক্ত ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে মানুষ। বিদ্যালয় ও কলেজ-মাদরাসার কক্ষগুলোতে আলাদা আলাদা করে পরিবার নিয়ে থাকছে বন্যার্তরা। সব মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

মাউশি সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে মোট তিনটি বিভাগে স্কুলগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে বন্যাদুর্গতরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সিলেট বিভাগে। এছাড়া রংপুরে ৩৪টি এবং রাজশাহীতে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

জেলাভিত্তিক মৌলভীবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি ৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গাইবান্ধা জেলায় ১৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাসমান জীবনযাপন করছে বন্যা দূর্গতরা।

স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েকশো স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়ে সঠিক কোনা তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

মাউশি ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয় নেওয়া এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ আছে। তাই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বন্যায় বন্ধ হয়ে যাওয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই হিসেব করা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিশেষ উপায়ে সিলেবাস শেষ করা হবে।

এই বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক বলেন, বন্যার কারণে যেসব শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়েছে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এটুকু বলা যায় এসব শিক্ষার্থীর সিলেবাস শেষ করার জন্য বিশেষ উপায়ে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্র হওয়া এই ১১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও এবারের বন্যায় সারা দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসা মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৫শ ৫৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতির তালিকায় রয়েছে ৭৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। এসব প্রতিষ্ঠানে বন্যার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, সারা দেশে ১২টি জেলায় শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪ হাজার ৩৩১টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভাগ কিংবা জেলা ভিত্তিক আলাদা করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দেয়নি তারা।

মাউশির তালিকা অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রংপুরে ৫২৯টি, সিলেটে ২৫২, রাজশাহীতে ১৩৫, চট্টগ্রামে ৩৬ এবং ঢাকা অঞ্চলে ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে - dainik shiksha তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত - dainik shiksha বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056180953979492