নিত্যপ্রোয়জনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখিয়ে চড়া দামে খাবার বিক্রি করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খাবারের দাম অনেক বেশি হলেও মান খুবই খারাপ।
এছাড়া নোংরা পরিবেশে করা হয় খাবার পরিবেশন। পঁচা খাবারও গরম করে পুনরায় বিক্রির অভিযোগও করেন তারা।
সরেজমিনে ক্যাফেটেরিয়া ঘুরে দেখা গেছে, ভাত,মাছ,মাংস,সবজি, সিঙ্গারা, চমুচা, পরোটা, ভাজিসহ অন্যান্য ভারি খাবার পাওয়া এ যায় এখানে। এসব খাবারের মধ্যে অধিকাংশই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ও অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও টেবিলের নিচে ফ্লোরে ঢাকনা ছাড়া রয়েছে রান্না করা তরকারি। এর ওপর ভনভন করছে মাছি। খাবারের দামও আগের তুলনায় বেশি রাখা হচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খাবারের মান খারাপ। সিঙ্গারা,সামুচা, রোলসহ অন্যান্য আইটেমগুলো আগের দিনের থাকে গরম করে দেয়া হয়। খাবারের মান নিয়ে কথা বলতে গেলে কাউন্টারে দায়িত্বরত থাকা ব্যক্তিরা উল্টো ছাত্রদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেন যেন শিক্ষার্থীরা তাদের হাতে জিম্মি।
বরির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান জানান, ক্যান্টিনে আমি মোরগ পোলাউ কিনতে আসলে বলা হলো ৬০ টাকা। আগে মোরগ পোলাও অথবা মুরগির তেহারী ৪৫ টাকা ছিলো। সেখান থেকে দায়িত্ব পরিবর্তন হওয়ার পরে ৫০ হলো। ক্যাফেটেরিয়াতে সেইম সাইজের মাংস নাম পরিবর্তন করে রোস্ট পোলাও নাম দিয়ে ৬০ টাকা করা হলো। কিন্তু রোস্ট পিস দেয়া হয়নি। রাইসের পরিমান কমছে, মাংস এর পরিমাণ কমছে, সিঙ্গারার সাইজ ছোট হয়েছে। পরাটা যেন একটা টিস্যু পেপার! মাছের দাম বাড়িয়ে হয়রানি করে! কেউ কিছু বলতে গেলে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। কেউ কি নেই দেখার? বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় যদি বাইরের মতো ব্যবসা করতে চায় তাহলে কেন ক্যাফেটেরিয়ার সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী নিয়াজ মোর্শেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এর আগে আমায় পঁচা সিঙ্গারা দিয়েছে। বিষয়টি জানালে খাবার পরিবেশনের পরিচালক জহিরুল ইসলাম আমার সঙ্গে বিতর্কে জড়ান। আসলে তিনি কোনো অভিযোগ আমলে নেন না।
জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মৌখিকভাবে আমি যে অভিযোগগুলো পেয়েছি তা সমাধান করার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যে যেভাবে আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে আমি সেভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছি।
খাবারের মান নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খাবারের মান যাচাই করবে শিক্ষার্থীরা। যারা লিখিত অভিযোগ করবে তাদেরকে নিয়ে আমি এরপর বসে সিদ্ধান্ত নেবো কি করা উচিত। তারাই ক্যাফেটরিয়া পরিচালনার জন্য লোকজন এনে দেবে, এবং তারাই ক্যাফেটরিয়ার খাবার সরবরাহ করবে।
ক্যান্টিনের খাবারের মান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মো.ছাদেকুল আরেফিন শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, এ বিষয়টা আমি অবশ্যই দেখবো।