বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীর সাথে বাস শ্রমিকদের দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এসময় বাস কাউন্টার ভাঙচুর ও দুই শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আশ্বাসে ঘটনার প্রায় ২ ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বাস শ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় এর প্রতিবাদে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে মেয়রের আশ্বাসের পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রুপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সড়ক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার লক্ষ্যে কয়েকজন ছাত্রী একটি থ্রি হুইলরে (মাহিন্দ্রা) ওঠে। এ নিয়ে সেখানে থাকা রুপাতলী বাস টার্মিনালের শ্রমিকরা মাহিন্দ্রা চালকের সাথে বাকবিতান্ডায় লিপ্ত হলে ছাত্রীরা প্রতিবাদ জানায়। এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। পরে বিষয়টি ক্যাম্পাসের অন্য শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতারা বিষয়টি সমাধান করার জন্য রুপাতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন। এসময় শ্রমিকরা তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই এলাকার একটি বাস কাউন্টারে ভাঙচুর করে এবং ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
পরবর্তী সময়ে তারা শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার প্রতিবাদে ও দোষী শ্রমিকদের বিচার দাবি জানিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে।
বিষয়টি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সমাধানের আশ্বাস দিলে ২ ঘন্টা পরে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময়ে সড়কের দুই প্রান্তে যানবাহনের দীর্ঘ জট বাঁধে এবং ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে অবহিত করেছি। মেয়র বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন, তাই সড়ক অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের বলা হয়। তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে বিষয়টি আমরা শোনার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে জানিয়েছে। পাশাপাশি সিটির অভিভাবক যেহেতু মেয়র, তাই আমরা তাকেও বিষয়টি জানিয়েছি। তারা বসে বিষয়টির সমাধান করবেন।
শ্রমিক সংগঠনের নির্বাহী কমিটির রফিকুল ইসলাম মানিক জানিয়েছেন, কাউন্টারের সামনে মাহিন্দ্রা রেখে যাত্রীদের তোলার জন্য, সেখানে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় সেটিকে সরতে বলা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকদের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি সমাধানের জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের বলা হলে তারা রুপাতলীতে এসে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার ব্যক্তিগত একটি কার্যালয় ও একটি কাউন্টারে ভাঙচুর চালায়। পাশাপাশি মালিক সমিতির অফিসের সামনে গিয়ে গালাগাল করে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানা পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি আপাতত সমাধান করা হয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।