মৌসুম শুরুতেই জমে উঠেছে ঝালকাঠির আমড়ার বাজার। জলে আর আর কূলে এখন তাজা আমড়ার সমারোহ। বলিশালের আমড়া নামে দেশব্যাপী সরবরাহ হওয়া এ সুস্বাদু ফলটির প্রধান যোগন দেয় দখিনের এ জেলাটি। কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলছে আমড়ার চাষ।
স্থানীয় চাষিরা জানান, পেয়ারার শেষের পথে শুরু হয় আমড়ার বাজার। ভাদ্র মাসের শুরুতেই জমতে থাকে আমড়ার বিকিকিনি। চলে টানা দু’মাস। আর এ সময়টায় জলে কিংবা স্থলে ঝালকাঠি জেলা জুড়েই গ্রামে গ্রামে বসে আমড়ার বাজার। তবে সদর উপজেলার ভীমরুলি, শতদশকাঠি, ডুমুরিয়া, আতাসহ আশপাশের দশ গ্রামের আমড়ার ভাসমান বাজার বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখান থেকেই নৌ বা সড়ক পথে সারাদেশে বেশিভাগ আমড়া সরবরাহ হয়। দেশব্যাপী বরিশালের আমড়া নামে যা পরিচিত তার বেশিরভাগ যোগান হয় এখন এ জেলা থেকে। বর্তমানে মৌসুম শুরুতে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মন দরে পাইকারী আমড়া কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফড়িয়া-আড়দ্দাররা। মৌসুম শেষে দাম আরও বেড়ে যাবে। স্থানীয় কৃষক আর ব্যাপারীরাও তাই আমড়ার আয়ে বেজায় খুশি।
স্থানীয় শতদশকাঠি গ্রামের আমড়ার ব্যাপারী সুনিল হালদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মৌসুম সবেমাত্র শুরু হয়েছে। চলবে আরো দু’মাস। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমি আমড়া সরবরাহ করি। পুরো মৌসুমে আসি এক কোটি টাকার আমড়া সরবরাহ করবো।
ভীমরুলি গ্রামের আমড়া চাষি হরিবর রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমড়া চাষ বেশ লাভজনক। এক একটি গাছে এক থেকে তিন হাজার টাকার আমড়া বিক্রি করা যায়। উৎপাদন খরচ কম লাগায় আমাদের অঞ্চলে দিন দিন আমড়ার চাষ বেড়ে চলছে।
ঢাকার শ্যাম বাজর থেকে আসা ফরিয়া আব্দুল মোতালেব দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি প্রতি বছরই ঝালকাঠি থেকে আমড়া কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। ঝালকাঠির আমড়া স্বাদ অন্য জেলার চেয়ে অনেক ভালো। এখানকার আমড়ার আকারও বেশ বড় এবং মিষ্টি স্বাদের।
ঝালকাঠি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দেশব্যাপী বরিশালের আমড়া নামে সরবরাহ হওয়া এ ফলটির বেশিরভাগ যোগ হয় এখন ঝালকাঠি জেলা থেকে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় প্রতিবছরই বেড়েই চলছে আমড়া চাষ। দ্রুত পঁচনশীল না হওয়ায় সংরক্ষণ ও ভোক্তা পর্যায়ে পৌছে দিতে সময় পাওয়া যায়। এ কারণে আমড়া চাষ বেশ লাভজনক। আর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আরো সহজ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের এ সুস্বাদু ফলটির সরবরাহ। রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণসহ আমড়া চাষে নিয়মিতভাবে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, কৃষি বিভাগের তথ্যমতে ঝালকাঠি জেলায় এ বছর ৬০২ হেক্টর জমিতে আমড়ার ফলন হয়েছে। মোসুম শেষে মোট উৎপাদন হবে ৪ হাজার ৮৭৪ মেট্রিকটন, যা বরিশাল বিভাগের অন্য জেলার চেয়ে বেশি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।