পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন প্রাণের উৎসব। এ দিনে অতীতের সব গ্লানি ভুলে প্রাণের উৎসবে মিলিত হন হাজারো মানুষ। তাই বর্ষবরণ প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ততা বাড়ছে বরিশালের সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের। পাশাপাশি হালখাতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
আয়োজকরা জানান, বর্ষবরণে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই আয়োজন শুরু হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং বৈশাখী মেলাসহ নানা আয়োজন থাকছে নগরীতে। এ আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত বরিশালের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা।
প্রতি বছর বর্ষবরণে বরিশালে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসন, চারুকলা, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও নববর্ষ বরণ উদযাপনের নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এদিকে, সিটি কলেজ মাঠে চারুকলার শিক্ষার্থী, সংগঠক এবং শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে শান্তির প্রতীক পায়রা, কৃত্রিম বাঘ, টাট্টু ঘোড়া এবং পাখিসহ নানা ভাস্কর্য।
এছাড়া চারুকলার অস্থায়ী কার্যালয়ে তৈরি হচ্ছে মুখোশ, প্ল্যাকার্ডসহ বাঙালি ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন। ব্যস্ততার কমতি নেই উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এবং বরিশাল নাট্যকর্মীদের। প্রতি বছরের মতো বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষ বরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারাও।
উদীচী বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক সাইফুর রহমান মিরণ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবার প্রভাতী অনুষ্ঠান, রাখি এবং ঢাক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা হবে বিএম স্কুল মাঠে। আর শোভাযাত্রাও বের করা হবে। বৈশাখ বরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে সকাল ৮টার মধ্যে।
চারুকলার সংগঠক সাংবাদিক সুশান্ত ঘোষ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা ছাড়াও পহেলা বৈশাখে সদর রোডে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হলে লোকজ সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী হবে। রমজান মাস উপলক্ষে এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তবে গত বছরের ন্যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং লোকজ সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী হবে অশ্বিনী কুমার হলে।
সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও বরিশাল জেলা প্রশাসন এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ বরণে শোভাযাত্রাসহ বর্ণাঢ্য কর্মসূচি রয়েছে।
এদিকে, বাঙালির প্রাণের উৎসব কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলার মৃৎশিল্পীদেরও। বৈশাখী মেলায় বিক্রির জন্য বাহারি নকশা খচিত ছোট-বড় খেলনা তৈরি করছেন তারা।
এরমধ্যে রয়েছে, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, রবি ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, গণেশ পাগল, মা সারদাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, বানর, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁস-মুরগির ডিম, আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, তাল ইত্যাদি।