বছরের প্রথম দিন নতুন পাঠ্যবই হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বিভাগের ৬ জেলায় প্রায় ১৮ লাখ শিক্ষার্থী। বিভাগে বইয়ের সম্ভাব্য চাহিদা ৪৯ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩১ টি। এছাড়া ৮ হাজার ৮২৩ টি ইংরেজি ভার্সনের বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
যথা সময়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবেন, সেই সাথে যথা সময়েই উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব উদযাপন করবে শিক্ষার্থীরা। প্রায় সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভাগে বরিশাল ও ভোলা জেলায় সব থেকে বেশি বইয়ের চাহিদা রয়েছে আর সব থেকে কম রয়েছে ঝালকাঠি জেলায়। বছরের প্রথম দিন বিভাগের ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে প্রস্তুত প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ। আর কোন বিষয়ের বই পহেলা জানুয়ারিতে না পেলেও সর্বোচ্চ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
বরিশাল বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, বিভাগের ৬ জেলায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ১১ লাখ ৯১ হাজার ৪৬ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। যারমধ্যে বরিশাল জেলায় ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৬৫ জন, পিরোজপুর জেলায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৩০ জন, ঝালকাঠি জেলায় ৭৪ হাজার ১০১ জন, বরগুনা জেলায় ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৫ জন, পটুয়াখালী জেলায় ২ লাখ ২৫ হাজার ১০৭ জন ও ভোলা জেলায় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৬৮৮ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় প্রথমিক শিক্ষার উপ-পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, কোন উদ্বেগের কারণ নেই, এরই মধ্যে গোটা বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী ৫০ শতাংশের মতো বই এসে পৌঁছেছে। বাকি বইগুলো পথে ও গাড়িতে রয়েছে। আশাকরি পহেলা জানুয়ারির আগেই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তাদের চাহিদা অনুযায়ী বই পেয়ে যাবে এবং সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যথা সময়ে বিদ্যালয়গুলো বই উৎসব পালন করবে। তিনি আরো বলেন, যে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বই উৎসবের দিনে সকল বিষয়ের বই পাবে না, তারাও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সে সব বই হাতে পেয়ে যাবে। আমি প্রতিনিয়ত ঢাকার সাথে যোগাযোগ রাখছি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা স্তরের ২ হাজার ৭৫১টি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই সরবরাহ করা হবে। এই হিসেবে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ৬ লাখ ৪০ হাজার ৫৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
যার মধ্যে বরিশাল জেলায় ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫০ জন, পিরোজপুর জেলায় ৭৪ হাজার ৭৮৪ জন, ঝালকাঠি জেলায় ৫১ হাজার ১০ জন, বরগুনা জেলায় ৬৮ হাজার ৯৯১ জন, পটুয়াখালী জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮৪৫ ও ভোলা জেলায় ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এসব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মোট বইয়ের সম্ভাব্য চাহিদা দেয়া হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৩ টি। এছাড়া দাখিল, এবতেদায়ী, এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল ও কারিগরি ট্রেডে আরও ৬৮ লাখ পিস বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আওতাধীন বেশির ভাগ বই সংশ্লিষ্টদের হাতে গিয়ে পৌঁছেছে। যে সকল বই বাকি রয়েছে তাও পথে গাড়িতে রয়েছে। কুয়াশাসহ বৈরি আবহাওয়ার কারনে বই পরিবহনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে, তবে আমরা যথা সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে তাদের নতুন বছরের পাঠ্যবই তুলে দিতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বই উৎসবের আয়োজনও চলছে, কোন ব্যাঘাত ঘটার কারণ দেখছি না। তবে এ পর্যন্ত যে বই হাতে পেয়েছেন তা দিয়ে শতভাগ বিদ্যালয় কভার কোন ভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন জেলার কর্মকর্তারা।