‘আঠারোতে জগন্নাথ সাহসী নির্ভীক’ স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যে ছিলো আনন্দ র্যালি, প্রকাশনা উৎসব, চারুকলা প্রদর্শনী, নাটক পরিবেশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ব্যান্ডদলে সুসজ্জিত আনন্দ র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, ভিক্টোরিয়া পার্ক পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, হল ও বিভাগসমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
আনন্দ র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী প্রকাশনা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। প্রকাশনা প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ, বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ থেকে প্রকাশিত জার্নাল, শিক্ষকদের প্রকাশিত গ্রন্থ ও অন্যান্য মুদ্রণ উপকরণ প্রদর্শিত হয়। এসময় 'বাঁধন' জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের উদ্যোগে ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় ‘ঐতিহ্য ও পরষ্পরায় আমার প্রিয় ক্যাম্পাস’ শিরোনামে চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীতে চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি ও অন্যান্য শিল্পকর্ম স্থান পায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নাট্যকলা বিভাগের উদ্যোগে 'নকশী কাঁথার মাঠ' নাটক মঞ্চায়িত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দুপুর দেড়টায় সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠির সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজিব মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এরমধ্যে নৃত্য, দলীয় সংগীত, নজরুল গীতি, লোক সংগীত উল্লেখযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতাকে গুরুত্ব প্রদানের লক্ষ্যে এবার দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ব্যান্ড ও লোক গানের ব্যান্ডদলের গান পরিবেশিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, আজকের দিনের শিক্ষার্থীদের এই উচ্ছাস-আনন্দ, অনুভূতিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বড় সম্পদ ও অর্জন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া বর্তমান সরকারের লক্ষ্য, আর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্মুখ সারিতে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।