ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংঘাত ও শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে এই সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান আশা করছে বাংলাদেশ।
এদিকে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।
তবে চলমান সংঘাতে বাংলাদেশের আরও জোরালো ও শক্ত অবস্থান চায় ফিলিস্তিন।
ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বাংলাদেশের কাছে আরও জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন।
শক্ত অবস্থান চায় ফিলিস্তিন
ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেছেন, ফিলিস্তিনের এই সঙ্কটের সময়ে টাকা নয়, আমরা পূর্ণ সমর্থন চাই। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অনুধাবন করা জরুরি। এটি অর্থনৈতিক সহায়তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে অর্থ নয়, চাই সহমর্মিতা। ’
তিনি আরও বলেছেন, ফিলিস্তিন এখন শুধু ইসরায়েল নয়, পশ্চিমা আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। সেখানকার মানুষজন এক মানবতাহীন জীবন যাপন করছে। বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, চিকিৎসা কোনো কিছুই সেখানে আর পর্যাপ্ত নেই। পুরো ফিলিস্তিনজুড়ে মানবতার সংকট চলছে। ফিলিস্তিনের গাজা এখন এক মৃত্যুপুরীতে রূপান্তরিত হয়েছে। মরদেহ রাখারও জায়গা হচ্ছে না মর্গগুলোতে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা সব সময় ফিলিস্তিনের নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে এই সঙ্কটের সময় আমরা আরো জোরালো ও শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করি।
ঢাকার ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা ফিলিস্তিনের পাশে
ঢাকায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার ১৫ টি মিশন রয়েছে। এসব দেশের রাষ্ট্রদূত ও চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ঢাকার ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত। ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে ইরান, ইরাক, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, কাতারসহ বাংলাদেশে অবস্থিত ওআইসির সদস্যভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতরা ফিলিস্তিন দূতাবাসে গিয়ে ইতোমধ্যেই সংহতি প্রকাশও করেছেন।
সংঘাত বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশের
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সশস্ত্র সংঘাত দ্রুত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘাত ও সহিংসতায় কোনো পক্ষই লাভবান হবে না। আমরা ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয়কেই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ সংঘাত ও শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে অনুরোধ করেছে। শুধুমাত্র সংলাপ এবং কূটনীতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং এই লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সকল পক্ষকে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ- মসজিদে দোয়া
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা বন্ধে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীতে ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করেছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার জুম্মার নামাজের মোনাজাতে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করা হয়।