বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করছে বলে ইরানের সংবাদভিত্তিক ২৪ ঘণ্টার চ্যানেল প্রেস টিভিতে একটি ভিডিও ক্লিপ প্রচার করেছে। ‘বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র’ শিরোনামে ডকুমেনটারিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন গভীর অবিশ্বাস ও সন্দেহে ভুগছে। বেইজিং ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান নৈকট্য ওয়াশিংটনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রেস টিভি ইরানের ইংরেজি ভাষায় প্রচারিত একটি নিউজ ও ডকুমেন্টারি নেটওয়ার্ক। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় ১০টা ৭ মিনিটে পোস্ট করা ২৭ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের প্রতিবেদনটিতে উপস্থাপক শুরুতেই বলেন, বিশ্বজুড়ে তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে নিজের স্বার্থে সরকার পরিবর্তনের ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি সংসদে উল্লেখ করেছেন।
র্যাবের ওপর ২০২১ সালের নিষেধাজ্ঞা ও সাম্প্রতিক সময়ের ভিসানীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা থেকেই বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রোধের মাত্রাটি বোঝা যায়। কিউবা, হাওয়াইসহ বেশ কিছু ক্যারিবিয়ান দেশের সরকারকে হটানোর ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। এ ক্ষেত্রে দেশটি তার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সহায়তা নেয়। দেশটি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানবাধিকার রক্ষার নামে এসব করে থাকে।
প্রেস টিভির ডকুমেনটারিতে পাকিস্তান থেকে ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ মোহাম্মদ আলী স্কাইপেতে সংযুক্ত হয়ে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সব জায়গাতেই রেজিম চেঞ্জের চেষ্টা একটা বাস্তবতা। কোনো উন্নয়নশীল দেশ যদি পশ্চিমাদের নীতি অনুসরণ না করে সে ক্ষেত্রে রেজিম চেঞ্জ একটি ‘অপশন’। তারা সেটা পারুক বা না পারুক, সেটা ভিন্ন আলাপ। কিন্তু বাংলাদেশকে এখন নিজ দেশের রাজনীতি এবং আঞ্চলিক রাজনীতির পাশাপাশি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করার চ্যালেঞ্জকে সামলাতে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলা হয়, বিগত এক দশকে বাংলাদেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানব উন্নয়ন এবং দারিদ্র্যবিমোচন হয়েছে। টানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার সরকার আগামী বছরের শুরুতে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, যার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে চীন। তবে, বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত দেশটির নির্বাচন নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। আগের নির্বাচনগুলোর সময় বাংলাদেশে ভারতীয় মিশন, সুশীলসমাজ, রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও এবার তারা নিজেদের এসব থেকে বিরত রেখেছে।