বাংলা স্কুল এন্ড কলেজে ডিজির প্রতিনিধি পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন শফিকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ ঠেকাতে শিক্ষা অধিদপ্তরের কঠোর অবস্থান জানতে পেরে পিছু হটেছেন ডিজির প্রতিনিধি শফিকুর গং। রাজধানীর মিরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারি শেরে বাংলা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিকুরকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ।

আগামী ১৫ মার্চ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। কারণ, দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডিজির প্রতিনিধির পদ থেকে লিখিতভাবে অব্যাহতি চেয়েছেন শফিকুর। গতকাল শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে অব্যাহতির কথা বলে এসেছেন তিনি (শফিকুর)। এদিকে জেলা শিক্ষা অফিসার রাজধানীর অপর দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ওই বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ডে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন দিতে চাইলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। ওই দুই প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিতর্কিত ওই নিয়োগ বোর্ডে তারা যাবেন না। প্রধান শিক্ষক নয় বাংলা স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার কথা। তাছাড়া, অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমোদন লাগবে।   

      

জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর প্রায় সব বেসরকারি স্কুলে নিয়োগবোর্ডে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে আসছেন মো. শফিকুর রহমান। প্রতিটি নিয়োগে জেলা শিক্ষা অফিসার ও ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন।

শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন উপ-পরিচালক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর যে ধারার বরাত দিয়ে স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে চাইছেন তা ভুল। কারণ, স্কুল এন্ড কলেজের যদি কলেজ অংশ ননএমপিও হয়, তবে সেখানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও গত জুনে জারি করা এমপিও নীতিমালার যেসব অংশ কার্যকর আর যেসব অংশ সংশোধনের অপেক্ষায় তা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ভালোভাবেই জানেন।

‘তবু প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়া বিস্ময়কর,’ যোগ করেন তিনি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার এমন উদ্যোগ সন্দেহজনক ও অবৈধ অ্যাখ্যা দেন তিনি। 

এদিকে গত একবছরে মহানগরীর সরকারি হাই স্কুলের কয়জন প্রধান শিক্ষককে কতটি বেসরকারি হাই স্কুলে নিয়োগ বোর্ডে  ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তার হিসেব চাওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। রোববার ১০ মার্চ বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এ হিসেব জানতে চেয়েছেন। সোমবারের মধ্যে এ হিসেব দিতে বলা হলেও মঙ্গলবারও হিসেব দেয়নি বলে পরিচালক (মাধ্যমিক) দৈনিক শিক্ষাকে নিশ্চিত করেছেন। ‘এখনই দেখছি কেন হিসেব দিল না,’ যোগ করেন মাধ্যমিকের পরিচালক।

এছাড়া অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া বন্ধ করতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও অভিভাবকরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘ দিনের পুরনো মাধ্যমিক পর্যায়ের এই প্রতিষ্ঠানে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক শাখা খোলা হয়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানটিকে স্কুল এন্ড কলেজ হিসেবে অনুমোদন দেয়। ২০১৭ থেকে প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক এ বি এম আবদুছ ছালাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু সব বিধি-বিধান ভঙ্গ করে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির জন্য প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046219825744629