তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার (২১শে জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষকরা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট
ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘটে থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতৃনবৃন্দ।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ খোকন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ এবং কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স জাতীয়করণ কমিটি সরকারিভাবে যাচাই বাছাই করলেও আমাদের বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়নি। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জাতীয়করণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
ভোলার চরফ্যাশনের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাঈদুর রহমান মামুন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানরা ভালোভাবে খেতে পারে। অথচ আমাদের সন্তানরা তাদের দিকে চেয়ে থাকে। আমরা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। খেয়ে না খেয়ে পাঠদান করে যাচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন আমাদের কাছ থেকে উপবৃত্তির টাকা ও সন্তানরা প্রাইভেটের জন্য টাকা চায় আমরা দিতে পারি না। তখন আমাদের মন দুঃখে ভরে উঠে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি করে হলেও স্কুল করে দেবেন। এখনো অনেক ইউনিয়নে সরকারি স্কুল হয়নি।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, ২০১৩ সালে সারাদেশে ২৬ হাজার ১৯৩টি স্কুল জাতীয়করণ হয়েছে। কিন্তু জাতীয়করণযোগ্য আরও চার হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় ও এর কর্মরত শিক্ষকরা জাতীয়কারণ হতে বঞ্চিত রয়েছে। এক্ষেত্রে তৃতীয়ধাপে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করলেও এ থেকে মাত্র ৩০৩টি বিদ্যালয়ের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে আরও চার হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘটের প্রথম দিনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন,সহসভাপতি ছালেহ উদ্দিন,সাংগঠনিক সম্পাদক আ স ম জাফর ইকবাল প্রমুখ ।