শ্রেণিকক্ষ সংকটে বিভিন্ন স্থানে জেএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের বারান্দা ও মাঠে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। মির্জাপুরে খোলা পরিবেশে বারান্দায় বসে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, পীরগাছায় কুয়াশায় ভিজে যাওয়া বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেয় ছাত্র-ছাত্রীরা।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় ২০০ শতাধিক শিক্ষার্থী বারান্দায় বসে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। খোলা পরিবেশে বারান্দায় বসে পরীক্ষা দেওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বারান্দায় এ পরীক্ষা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে জেএসসি পরীক্ষার্থীরা খোলা পরিবেশে বারান্দায় বসে পরীক্ষা দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাসুম, জুয়েল, রিফাতসহ অনেকেই অভিযোগ করেছে, খোলা স্থানে বারান্দায় বসে পরীক্ষা দেয়া তাদের জন্য একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ এবং একাডেমিক সুপারভাইজার প্রবীর কুমার চৌধুরী বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং নকল মুক্ত পরিবেশে জেএসসি-জেডিসি এবং ভোকেশনাল শাখার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে বসার জন্য শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় কিছু পরীক্ষার্থীকে বারান্দায় বসানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কাশিয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অস্থায়ী প্যান্ডেলের ভেতরে কক্ষ তৈরি করে জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে বসে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। রাতের কুয়াশায় ভিজে যাওয়া বেঞ্চে বসা ও পরীক্ষার খাতা রাখায় শিশুরা বিড়ম্বনায় পড়ছে। আবার রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
ঐ পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব টিকেন চন্দ্র রায় বলেন, ‘এবার তাদের বিদ্যালয়ে স্থাপিত কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৬৯৩ জন। প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের তুলনায় পরীক্ষার্থী বেশি হওয়ায় ডেকোরেটরের সাহায্যে বিদ্যালয়ের মাঠে প্যান্ডেল করে অস্থায়ীভাবে কক্ষ করে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। এই অস্থায়ী কক্ষে অন্তত শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।’
কাশিয়া বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অস্থায়ী কক্ষে পরিদর্শক আব্দুর রউফ বলেন, ‘শামিয়ানা দিয়ে তৈরি ছাদ আর চারিদিক ঘেরা এই অস্থায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে সূর্যের তাপে বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আমরাও ভীষণ অস্বস্তিতে আছি।’
অস্থায়ী কক্ষের পরীক্ষার্থী নয়ন বলেন, ‘টিন দিয়ে ঘেরা এসব কক্ষের ওপরে ছাদ না থাকায় রাতে কুয়াশায় বেঞ্চ ভিজে থাকে। সকালে পরীক্ষা শুরুর সময় এসব ভেজা বেঞ্চে খাতা রাখলেই ভিজে যায়। আর পরীক্ষা শুরুর পর বেলা যত বাড়ে সূর্যের তাপও তত বাড়ে।’
পীরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া বলেন, ‘কেন্দ্রটিতে শ্রেণিকক্ষের চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’