বাসাভিত্তিক ডিজিটাল শিক্ষা জোরদার করা প্রয়োজন : রাশেদা কে চৌধুরী

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এনজিওর ভূমিকা রয়েছে। অথচ করোনাকালে শিক্ষা-সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম না চালাতে এনজিওগুলোকে বলা হয়েছে। করোনায় শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ মুহূর্তে প্রয়োজন বাসাভিত্তিক ডিজিটাল শিক্ষা জোরদার করা। তা করতে গেলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন হবে একটি ডিজিটাল ডিভাইস, ইন্টারনেট সংযোগ, ডাটা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ সরকারকে দিতে হবে। তবে ডিজিটাল ডিভাইস আর ডাটা দেওয়ার ব্যবস্থা বেসরকারি খাত থেকেও হতে পারে। করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে না হোক, প্রত্যেক পরিবারে অন্তত একটি ডিভাইস দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ কাজে বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে পারে।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষা স্তরসহ সবমিলিয়ে আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা চার কোটি। সরকারের কাছে উপবৃত্তি বিতরণের মডেল রয়েছে। সেই মডেল ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের হাতে ডিভাইস পৌঁছানো সম্ভব। ক্ষতি পোষাতে সবক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অস্বচ্ছল পরিবারের তালিকা করে অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সহায়তা দিতে হবে।

আরও পড়ুন :  দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা

ডিভাইস ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জনও গুরুত্বপূর্ণ। দিনমজুর, শ্রমিক, কৃষক পরিবারের অভিভাবক ও সন্তানদের এই পাঠদানে অভ্যস্ত করে তুলতে ও তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পাড়াভিত্তিক একজন করে শিক্ষক নিযুক্ত করা যায়। গ্রামে কয়েকটি বাড়ি মিলে একটি পাড়া, সেখানে হয়তো শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০০ জনের ওপরে হবে না। শিক্ষক তার বাড়িতে বসেই যুক্ত হবেন এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। ঘণ্টা ও সময় ভাগ করে ক্লাস চলবে। পাড়াভিত্তিক মাসিক সূচিও তৈরি করা যেতে পারে এর জন্য।

সব শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে টিকা দিতে হবে। শিক্ষকদেরও প্রণোদনা দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে সরকারের শক্ত রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমাদের এখানে সব সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে হয়। শিক্ষার বড় অংশীজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তাদের অভিমত জানার চেষ্টা করা হয় না। তাই অনেক সিদ্ধান্তে ঘাটতি থেকে যায়। শিক্ষা কারও একার বিষয় নয়। শিক্ষা পুরো জাতির মেরুদণ্ড। সবাইকে তা ভাবতে হবে। প্রশ্ন হলো, আমরা এভাবে ভাবছি কিনা।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

সরকারের অগ্রাধিকারের জায়গায় শিক্ষাকে আনতে হবে। এ মুহূর্তে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এমন হলে শিক্ষা থেকে আমাদের একটি প্রজন্ম হারিয়ে যাবে, যে ক্ষতি আরও কখনও পূরণ হবে না।

লেখক : গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা

 

সূত্র : ১৩ জুলাই, দৈনিক সমকাল


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের - dainik shiksha দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন - dainik shiksha নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর - dainik shiksha জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025010108947754