বাড়তি সময়েও শেষ হয়নি শাবিপ্রবি হলের কাজ, ভোগান্তিতে ছাত্রীরা

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি |

নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত এক বছর পার হলেও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) নির্মাণাধীন বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল বুঝে পায়নি কর্তৃপক্ষ। গত বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ধীরগতির কার্যক্রমের জন্য আরো এক বছর সময় বাড়ানো হয়। তবে এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পি এফ করপোরেশন। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। 

  

হলে সিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হোস্টেলে থাকতে হচ্ছে ছাত্রীদের। এতে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ গুনতে হয় ১ হাজার ৮০০ টাকা। অনেকে সেই ভাড়া দিতে না পেরে আশ্রয় নেন হলের গণরুমে। সেখানে গাদাগাদি করে থাকেন ছাত্রীরা। গণরুম সমস্যা নিরসনে নির্মাণাধীন হল উদ্বোধনের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, বহুল প্রত্যাশিত এ হলে কবে নাগাদ ছাত্রীরা উঠতে পারবেন তা নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প-১ এর পরিচালক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এ কে এম ফেরদৌস বলেন, এ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষ হলে হলের ফার্নিচারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্থাপন করতে আরো দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগতে পারে। তারপর ঠিকাদার তা হস্তান্তর করবেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল নির্মাণের কাজ করছে মেসার্স পি এফ করপোরেশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৮০ আসনবিশিষ্ট চার তলা এ হল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখিয়ে আরো ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। ফলে এ হল নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে ২৫ কোটি ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য দুটি হল আছে। হলে পর্যাপ্ত সিট না থাকায় এ দুটি হলের অধীনে ক্যাম্পাসের বাইরে সামাদ হাউজ, ফজল কমপ্লেক্স ও আমির কমপ্লেক্স নামে তিনটি হোস্টেলে থাকছেন ছাত্রীরা। এসব হোস্টেলে অন্তত দুই শতাধিক ছাত্রী থাকেন।

হোস্টেলে থাকা ছাত্রীদের অভিযোগ, হোস্টেলে নানা সমস্যায় তাদের দিন পার করতে হয়। খাবার সমস্যা, পানি সংকট, রিডিং রুম না থাকা, নিরাপত্তাহীনতা, উচ্চস্বরে গাড়ির আওয়াজ ও গাদাগাদি করে রুমে থাকাসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয়। দিনের পর দিন এসব সমস্যা বাড়তে থাকায় নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। ফলে নতুন হল উদ্বোধনের প্রতীক্ষায় আছেন এসব ছাত্রীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম ছাত্রী হলের অধীনে থাকা আমির কমপ্লেক্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পায় এখানে তার ন্যূনতম সুযোগ নেই। অথচ আমরা তাদের তুলনায় ১২ গুন ভাড়া বেশি দিয়ে থাকি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, আমার চাকরির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি এসব সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত হতে চাই না। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো না।

তবে ফিল্ড অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম সবুজ বলেন, হলের প্রায় ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঈদের ছুটিতে অনেক শ্রমিক বাসায় চলে যাবে। তাই ঈদের আগে এ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। তবে ঈদ শেষে খুব দ্রুত এ কাজ শেষ হবে।

নতুন নির্মিতব্য এ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. চন্দ্রানী নাগ বলেন, কাজ শেষ হয়ে গেলে খুব দ্রুত হল উদ্বোধন হবে। নতুন হলে ৪৮০ জন ছাত্রী থাকতে পারবে। আশা করি, মেয়েদের আবাসন সংকট নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড - dainik shiksha ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির - dainik shiksha অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব - dainik shiksha জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে - dainik shiksha সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ - dainik shiksha মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058591365814209