‘এই শিক্ষক সমকামী করে পুলিশ ভাই, তাই মেরে ফেলেছি’

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সাভারে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় এক ব্যক্তি খুনের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট পিবিআই তদন্তে নেমেছে। এ ঘটনায় জঙ্গি গোষ্ঠী জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। নিহত ওই ব্যক্তির নাম গোলাম কিবরিয়া (৪৩)। তিনি সাবেক স্কুল শিক্ষক এবং পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শুকুর মুন্সির ছেলে। মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের পাশে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘এই ব্যক্তি সমকামী করে পুলিশ ভাই, আমরা তাই মেরে ফেলেছি। ভাই ও অবৈধ কাজ করে। আমরা ইসলামের সৈনিক।’

এর আগে ২০১৬ জনের ২৫ এপ্রিল কলাবাগান লেকলার্কাসের বাসায় ঢুকে জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহাবুব রাব্বী তনয়কে সমকামীতার অভিযোগে জঙ্গিরা কুপিয়ে হত্যা করেছিল। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ওই খুনের দায় স্বীকার করে। রবিার সাভারে সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ত কিনা এর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের একাধিক ইউনিট। 

স্থানীয়রা জানায়, গোলাম কিবরিয়া সাভার মডেল স্কুলের সাবেক শিক্ষক ছিলেন। কর্মজীবন শেষে বাসাতেই প্রাইভেট পড়াতেন তিনি। ওই বাসার একটি কক্ষে একাই বসবাস করতেন তিনি।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ওই এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।

৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ৮ নম্বর এবং সাভার রেডিও কলোনী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক। বর্তমানে তিনি টিউশনি ও জমি কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়।

স্থানীয়রা জানান, স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ভাইদের সঙ্গে এই বাড়িতেই তিনি আলাদা থাকতেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠলেও রোববার দুপুর হয়ে গেলেও তিনি রুম থেকে বের না হচ্ছিলেন না। পরবর্তীতে তার রুমের কাছে গিয়ে দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পেছনের দরজায় গিয়ে সেটি খোলা পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, খাটের উপর লুঙ্গী দিয়ে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় ছিল মরদেহ।

নিহতের ছোটভাই আপেল মাহমুদ বলেন, আমার ভাই একাই এই বাসায় থাকতেন তিনি আগে স্কুলশিক্ষক ছিলেন তবে বর্তমানে তিনি সাভারের বিভিন্ন স্থানে টিউশনি করতেন, পাশাপাশি জমি কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। আর আমার ভাইয়ের পায়ে সমস্যা থাকায় তিনি দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে পারতেন না তাই একটি নির্দিষ্ট রিকশাযোগে সর্বত্র যাতায়াত করতেন। আজকে (রোববার ) সকালেও আমার ভাই বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নরমালি (স্বাভাবিক অবস্থায়) আমার ভাই ১২টার মধ্যেই ঘুম থেকে উঠে যেতেন। তবে দুপুর হয়ে গেলেও তিনি ঘুম থেকে না উঠায় প্রতিবেশীরা রুমে গিয়ে আমার ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পান। এসময় তারা আমার ভাইয়ের রুমের ভেতরে থাকা একটি স্টিলের আলমারির তালা ভাঙা ও ভেতরের মালামাল তছনছ করা অবস্থায় দেখতে পান। আমার জানা মতে, আমার ভাইয়ের কাছে জমানো অনেক টাকা ছিলো। এখন কি কারণে ও কারা আমার আমার ভাইকে হত্যা করলো বিষয়টি আমরা বুঝছি না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004647970199585