বায়ুযুক্ত কংক্রিটে নির্মিত স্কুলভবন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। রিইনফোর্সড অটোক্লেভড অ্যারেটেড কনক্রিট (আরএএসি) নামে এই নির্মাণ উপকরণে নির্মিত শতাধিক স্কুলভবন গত সপ্তাহেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবার জানা গেলো, এসব স্কুল ভবনের ধসে পড়া ঠেকাতে ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন। তবে এই অর্থ কেবল ছাদ সংস্কারে। মেঝে অপসারণের প্রয়োজন হলে অর্থের প্রয়োজন আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই জরুরি প্রয়োজন দেশটির প্রশাসনিক কেন্দ্র ডাউনিং স্ট্রিটের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও স্কুল ভবনের ছাদ ও পলেস্তারা খসে পড়া সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইংল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্যাপকভাবে স্কুল ও কলেজ নির্মাণের জন্য আরএএসি ব্যবহৃত হয়েছিল। কয়েক বছর আগে এই কংক্রিটের ঝুঁকির বিষয়টি ধরা পড়ে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে স্কুলগুলোকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা শুরু করে মন্ত্রণালয়। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় ২২ হাজার স্কুলে পরিচালিত সরকারি জরিপে ধসে পড়ার শঙ্কায় থাকা স্কুলগুলোর ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। সম্প্রতি ১৫৬ স্কুলকে বায়ুযুক্ত কংক্রিটের ঝুঁকির কথা জানিয়ে সতর্ক করা হয়।
ঝুঁকিতে থাকা স্কুলগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক ও অবশিষ্টগুলো মাধ্যমিকের বলে জানা গেছে। এসব অনিরাপদ স্কুল ভবনে সাত লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণি কারযক্রমে অংশ নিচ্ছিলেন।
কিছু দিন আগে কেন্টের একটি স্কুলের স্টাফ রুমের আরএএসিতে নির্মিত ছাদ ধসে পড়ে। সেদিন ছুটির দিন (শনিবার) হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ওই ঘটনা সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে তুলেছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, কিছু স্কুলে আরএএসি অপসারণ করলেই ঝুঁকির শঙ্কা কমে যাবে। তবে অনেক স্কুলের ভবনই নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজন পড়বে। এ খাতে দেড়শ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে। কোন স্কুলে কেমন সংস্কার প্রয়োজন তা নির্দিষ্ট করতে জরিপ চালানো হচ্ছে।
ইংল্যান্ডের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ঝুঁকিতে থাকা স্কুলভবনগুলোর পুনর্নিমাণে সাত মাসেরও বেশি সময় প্রয়োজন। আর ঝুঁকেতে থাকা স্কুলগুলোর এক-পঞ্চমাংসের পুনর্নিমাণেই আড়াইশ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অর্থ দরকার হবে।
বিষয়টি নিয়ে অগণিত অভিভাবক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এসব স্কুলে পাঠদান সচল রাখতে করোনা মহামারিকালীন সময়ের মতো অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্কুল বন্ধের বিষয়ে দেশটির শিক্ষা সচিব গিলিয়ান কিগান বলেন, স্কুল ও কলেজে শিশু এবং কর্মীরা নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নেই।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।