নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি হরতাল-অবরোধের মধ্যেও ঢাকার রাস্তায় যে যানজট লেগে যাচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে দলটির তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, বিএনপির কোনো কর্মসূচিতেই আর ‘জনসমর্থন নেই’, এরপরও তারা হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দিচ্ছে, কারণ তাদের ‘কোনো লজ্জা নেই’।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট প্রকাশিত এসডিজি এবং উন্নয়নমূলক ফিচার সংকলনের মোড়ক উন্মোচনের পর চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিএনপির আন্দোলন নিয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “অবরোধের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যানজট হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়িও চলছে। এই যে কর্মসূচি দিয়ে তারা নিজেদের হাস্যকর করছে, আমি বুঝি না তারা কেন এই সিদ্ধান্তগুলো দেয়।
“এ সমস্ত কর্মসূচি কেউ মানছে না, বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিচ্ছে যে ‘তোমাদের মানি না’, কিসের অবরোধ! এভাবে গাড়ি-ঘোড়া চলা মানে ওদেরকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেওয়া। এরপরও লজ্জা হয় না ওদের। যার লজ্জা হারিয়ে গেছে, তার তো লজ্জা লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপির লজ্জাও হারিয়ে গেছে।”
গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ সংঘর্ষের মধ্যে পণ্ড হয়ে গেলে বিএনপি পরদিন হরতাল ডাকে। এরপর দফায় দফায় হরতাল ও অবরোধ দিয়ে আসছে দলটি। এর মধ্যে দ্বাদশ সংদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে, যা বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশে গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল সেটি আমরা বলতে পারি না।”
২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এখন একনাগাড়ে যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও করা হচ্ছে, এগুলো দেশের স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সবকিছুই বিনষ্ট করছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া কখনো উন্নয়ন সম্ভবপর নয়।
“আমাদের দেশে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার যে নেতিবাচক রাজনীতি, এটি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রচণ্ড অন্তরায়।”
২৮ ও ২৯ নভেম্বর ‘সরকার ফেলে দেওয়া হবে’ বলে তারেক রহমানের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, “এরকম তো বহু ঘোষণা শুনেছি। যতবার তারা ঘোষণা দেয় তারা পালিয়ে যায় বা হারিয়ে যায়। এসব ঘোষণা আসলে তাদেরকে হাস্যকর করে তুলেছে।
“তারা এসব ঘোষণা দিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিএনপি এখন প্রকৃত অর্থে সন্ত্রাসী সংগঠনের পরিণত হয়েছে, তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। তাদের নেতারাও সন্ত্রাসী নেতায় পরিণত হয়েছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, একটি নির্বাচিত সরকারকে দিন তারিখ বলে ফেলে দেওয়ার হুমকি একটি ‘সন্ত্রাসী ঘোষণা’ ছাড়া আর কিছু নয়।
“এই অপরাজনীতি থেকে আশা করি তারা বেরিয়ে আসবে। সাত-সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে উনাদের দেশের বাস্তবতা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। কারণ সিদ্ধান্তটা ওখান থেকে আসে।”
বিএনপি জোট থেকে অনেকের বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি নেতারা তো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাদের থলে থেকে তো আস্তে আস্তে সবাই বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি, তাদের থলে থেকে যাতে বের না হয় সেটার জন্য একটু সচেষ্ট হবেন।”