রাজবাড়ীতে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হলে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পান্না চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের জেরে রাজবাড়ী রেল স্টেশনে জিআরপি থানায় হামলা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। এতে জিআরপি থানার ওসি সোমনাথ বসুসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত ২ পুলিশ সদস্যকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের বাসভবন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের পান্না চত্বর ঘুরে ফেরার সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে ধাওয়া দেয়। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শটগানের গুলি ছোঁড়ে ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে বিএনপির কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করে।
কালুখালী, পাংশা থেকে আসা নেতাকর্মীরা ট্রেনের জন্য রাজবাড়ী রেলস্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন। ওই সময় তারা জিআরপি থানার পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এবিষয়ে রাজবাড়ী জিআরপি থানার ওসি সোমনাথ বসু জানান, রেল স্টেশনে বিএনপির লোকজন তাদের উপর হামলা চালান। হামলায় তিনিসহ এসআই বিধান চন্দ্র, বকশি আনন্দ কুমার ও কনস্টেবল শারমীন আক্তার আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বিধান ও শারমীন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, ‘কর্মসূচি পালনের বিষয়ে আমি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমাদের শোভাযাত্রার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। শোভাযাত্রা পান্না চত্বর ঘুরে আসার সময় পুলিশ কী কারণে গুলি বর্ষণ করল, তা আমি বুঝতে পারছি না। শোভাযাত্রা যখন শেষ পর্যায়ে তখন এ ঘটনা ঘটে।’
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, বিএনপির মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হচ্ছিল। তাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল। মিছিল যখন শেষের দিকে তখন তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়।
জেলা পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে শোভাযাত্রা করতে বিএনপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। যেকারণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছেন। ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।