বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায় পরিবর্তনের জন্য প্রতারণা, জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সদ্য আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে এ মামলা করেন অ্যাডভোকেট ইমরুল হাসান। মামলার গ্রহণযোগ্য উপাদান না থাকায় আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬, ৪৬৭, ৪৬৮ ধারায় এ মামলা করা হয়।

মামলায় বলা হয়, মামলার অভিযুক্ত খায়রুল হক বাংলাদেশি আইনবিদ এবং বাংলাদেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশ সংবিধানে যোগ করা হয়েছিল। এরপর থেকে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে পরবর্তী সরকার গঠিত হচ্ছিলো।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজনের রিট আবেদন করলে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে রায় দেন। রায়ে বলা হয় যে, ‘ত্রয়োদশ সংশোধনি সংবিধান সম্মত ও বৈধ। এ সংশোধনী সংবিধানের কোন মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নাই।’

রিট আবেদনকারী উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ আপিল বিভাগে এর শুনানি শুরু হয়। আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় আটজন আইনজীবী বক্তব্য দিয়েছেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে সিনিয়র আইনজীবী টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম ও রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।

মামলায় বলা হয়, অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য অভিযুক্ত আমলে না নিয়ে তার চাকরি মেয়াদকালে তড়িঘড়ি করে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মে তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় প্রদান করেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিল। কিন্তু রায়ের ব্যাপারে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ জনমনে অসন্তুষ্টি দেখা দেয়ায় তিনি আর স্বাক্ষর প্রদান করেন নাই এবং নথি নিজ জিম্মায় বাসায় নিয়ে রাখেন।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে তারিখে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। সেই সাথে তিনি অত্র আপিল মামলার নথি বাসায় নিয়ে যান যা বেআইনি।

বিগত ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে আসলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে চিরকাল ক্ষমতায় রাখার জন্য রায় এর ১৬ মাস ৩ দিন পর পরে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায়ে করেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ১৬ মাস ৩ দিন পর যে রায় প্রকাশ করলেন সেখানে তিনি এ অংশটি রাখেননি।

মামলায় বলা হয়, অসাধুভাবে প্রধান বিচারপতির পদ ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে বিশ্বাসভঙ্গ ও জালিয়াতির মাধ্যমে এ রায় প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, এবিএম খায়রুল হক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক বিগত ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১ অক্টোবর নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষার নির্দেশনা - dainik shiksha ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষার নির্দেশনা রাজশাহী কলেজে নতুন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha রাজশাহী কলেজে নতুন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ রাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা চাইনি : হাসনাত - dainik shiksha রাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা চাইনি : হাসনাত ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৬৩১, আহত ১৯ হাজার - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৬৩১, আহত ১৯ হাজার সৃজনশীলেই হবে ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের মাধ্যমিকের পরীক্ষা - dainik shiksha সৃজনশীলেই হবে ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের মাধ্যমিকের পরীক্ষা বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব কর্মসূচি - dainik shiksha বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব কর্মসূচি একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027852058410645