বিচারপতি বজলুর রহমান ছানার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালন

রাজশাহী প্রতিনিধি |

সুপ্রিমকোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও রাজশাহী প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য বিচারপতি বজলুর রহমান ছানার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা স্মৃতি পরিষদ তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে। তার স্মরণে রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা অংশ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।

বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া (জিন্নাহ), নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. মেহেদী হাসান তালুকদার,বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্টা রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান, সিটি প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ জুলফিকার, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. একেএম আখতারুল কবীর, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি ভাষাসৈনিক হাবিবুর রহমান শেলীর ছোটভাই মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, স্মৃতি পরিষদ সদস্য জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা ইয়াসির আরাফাত সৈকত, স্মৃতি পরিষদ সদস্য ডা. আসাদুর রহমান বিপ্লব।

বক্তারা বলেন, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ লাশ দাফনের জায়গা পাচ্ছিলো না। সেসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থাকা বজলার রহমান ছানা তৎকালীন পানিমন্ত্রীকে এক প্রকার জোরজবরদস্তি করে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করিয়ে দেন। যার সুফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ পাচ্ছে। দায়িত্বের প্রশ্নে যেমন শতভাগ ছিলেন, নীতির প্রশ্নেও ছিলেন আপোষহীন। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জকে রক্ষার করার জন্য তাঁর ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা হয়।

বজলুর রহমান ছানা ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের গোয়ালপাড়া মহল্লার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে নবাবগঞ্জ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। মেধাবী ছাত্র বজলুর রহমান ছানা ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ থেকে জুরিসপ্রুডেন্স  বিষয়ে স্নাতক  (সম্মান) এবং ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে একই বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে সমাজ বিজ্ঞানে বিভাগ থেকেও তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তৎকালীন বৃহত্তর রাজশাহী তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা বজলুর রহমান ছানা ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তৎকালীন নবাবগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগ ও আশির দশকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া রাজশাহী প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ ও ১৯৭৯-৮০ খ্রিষ্টাব্দে কারাবরণ করেন তিনি। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে বিশেষ সামরিক শাসনামলে সামরিক আদালতে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন যদিও পরবর্তীতে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।

তিনি ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে থেকে প্রায় ১৫ বছর ঢাকার ধানমন্ডি ল’ কলেজে আইনের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার জজ কোর্ট এবং ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোটে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিযুক্ত হন। বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্টে তিনি প্রচুর সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করেছেন তিনি। 

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের  বিচারপতি হিসেবে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00301194190979