বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

ঢাবি প্রতিনিধি |

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিদেশি নাগরিক একটি খোলা চিঠি দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতারা। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। 

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষকরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কিছু মানুষ যারা আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত, তারা যখন কোনো অন্যায় এবং দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নেন, তখন মানবতা লজ্জিত হয়। প্রতিটি সমাজেই কিছু মানুষ থাকেন, যারা নীতিজ্ঞান বিবর্জিত। অনেক সময় তারা নানা প্রলোভনের মুখে পড়ে অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেন। এই ১৬০ জন মানুষ যারা বিচার প্রক্রিয়াধীন একটি বিষয় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, তারা নীতিজ্ঞান বিবর্জিত মানুষ।

তিনি আরো বলেন, আমার ধারণা তারা লবিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। তাদের হয়তো বা কোনো গোষ্ঠী, কোনো রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায় বা কোনো ব্যক্তি নিয়োগ করেছেন অর্থের বিনিময়ে। সে কারণেই হয়তো তারা আজকে কোনো দুর্নীতি এবং অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এটি কিন্তু তারা নিজের দেশে করতে পারতেন না। 

আরো পড়ুন : ড. ইউনূসের মামলা লড়বেন না আইনজীবী খুরশিদ আলম

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৬৮টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে দুটি হচ্ছে ফৌজদারি মামলা। বাকিগুলো কর ফাঁকিসহ নানা মামলা। গ্রামীণ টেলিকমের মামলা রয়েছে ৬৪টি। গ্রামীণ কল্যাণের মামলা রয়েছে ৬৯টি, গ্রামীণ কমিউনিকেশন ২৫টি, গ্রামীণ ফিশারিজ ৮টিসহ ১৬৮টি মামলা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো এই মামলাগুলো কে করেছে? এই মামলাগুলো করেছে তারাই যারা ড. ইউনূ‌সে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। সরকার তো তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি। তাহলে কী কারণে না জেনে না বুঝে বিশ্ববরেণ্য ১৬০ জন ব্যক্তি বিবৃতি দিলেন।

তিনি আরো বলেন, তিনি (ড. ইউনূ‌স) একটি রাজনৈতিক দল তৈ‌রি করেছিলেন। সরকার পরিচালনার খায়েশ তার হয়েছিলো। কিন্তু সেই সময়ে তার ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি। যে প্রতিষ্ঠান ১৬০ জ‌নের বিবৃ‌তি প্রচার ক‌রে‌ছে তারা টাকার বিনিময়ে ক‌রে‌ছে। তাহলে কত লাখ ডলার খরচ করে এই বিবৃতিটি দেয়া হয়েছে? আর সেই সময়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছে যখন বাংলা‌দে‌শে এক‌টি জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটি করবেন এবং তিনি সেই অঙ্গীকার করছেন। এই সময়ে এসে ডক্টর ইউনূস ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, ড. ইউনুস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চাচ্ছেন। একটি দেশের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থই হলো দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আনা। আপনি কেনো শহীদ মিনারে যান না, কেনো স্মৃতিসৌধে যান না, কেনো আপনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চান না। এগুলো কি দেশ প্রেমের অংশ নয়। আপনার কি দেশপ্রেম আছে। যদি আপনার দেশ প্রেম থাকতো তাহলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এতোগুলো মানুষকে দিয়ে আপনি বিজ্ঞাপন দিতেন না। আপনার কাছে যদি ম্যাটারিয়ালস থাকতো তাহলে তো সেখানে খবর হতো। অর্থ দিয়ে বিজ্ঞাপন ছাপানো ছাড়া আর কোনো প্রক্রিয়ায় আমরা আপনাকে অগ্রসর হতে দেখিনি।

আরো পড়ুন : ইউনূস ইস্যুতে খোলা চিঠির প্রতিবাদে ৫০ সম্পাদকের বিবৃতি

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিয়া রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক প্রক্টর অধাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ - dainik shiksha এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050981044769287