দেশের অনেক ছেলে বা মেয়ে বিদেশ পড়েন, প্রতি সেমিস্টারে শত শত ডলার টিউশন ফি পাঠাতে হয়। এটি বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স হিসেবে বিদেশে যায়। এমন রেমিট্যান্স বা টিউশন ফির ওপর কোনো উৎসে কর বসবে না।
সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের টিউশন ফি পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সেই অর্থ পাঠানোর সময় উৎসে কর কাটবে না।
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এ ধরনের সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে। মালয়েশিয়া ও চীনেও অনেকটা নিজের খরচে পড়তে যান অনেক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জাপানসহ ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আছেন।
ডলার–সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক বিদেশে টিউশন ফি বাবদ ডলার পরিশোধে অনীহা দেখায়। এখন এই ডলারে টিউশন ফি পরিশোধে উৎসে কর কাটা হবে না। ফলে টিউশন ফির অর্থ পাঠাতে ভোগান্তি কিছুটা কমবে বলে মনে করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর কর্মকর্তারা।
টিউশন ফিসহ ছয় ধরনের কাজে বিদেশে অর্থ পাঠাতে উৎসে কর কেটে রাখার বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। অন্য পাঁচটি খাত হলো—বিদেশের কোনো কর্তৃপক্ষকে অর্থ পরিশোধ, পেশাজীবী সংগঠনের চাঁদা পরিশোধ, বিদেশে অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানের লিয়াজোঁ অফিস, বিদেশে পণ্য উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ ও নিরাপত্তা জামানত। সাধারণত বিদেশে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধের সময় ৩০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হয়।
বিদেশের কোনো কর্তৃপক্ষকে অর্থ পরিশোধের বিষয়ে আসা যাক। বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্তৃপক্ষকে নানা কাজে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। সেসব অর্থ পরিশোধের সময় উৎসে কর কেটে রাখা হবে না।
বাংলাদেশের সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার করদাতা ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য। এসব আন্তর্জাতিক পেশাজীবী সংগঠনের বার্ষিক চাঁদাসহ বিভিন্ন ধরনের চাঁদা পরিশোধের অর্থ পাঠানোর সময়ও উৎসে কর বসবে না।
এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের বিদেশে লিয়াজোঁ অফিস আছে, এসব লিয়াজোঁ অফিসে পাঠানো অর্থেও উৎসে কর বসবে না। এ ছাড়া বিদেশে পণ্য উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ এবং নিরাপত্তা জামানতের অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রেও উৎসে কর দিতে হবে না।