শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বেশকিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ছুটি নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। পুরো ছুটিতে নিয়েছেন বেতন-ভাতাসহ আর্থিক সুযোগ-সুবিধা। ছুটি শেষে কয়েক দফা চিঠি পাঠালেও ফেরেননি তারা। অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিদেশ যাওয়া ছয় শিক্ষক ও তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছরের ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক। তাদের মধ্যে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সৈকত চৌধুরী ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে শিক্ষা ছুটিতে যান। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ছুটিতে যান একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ঝর্না রানী সরকার। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা ছুটিতে যান উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তোহিদুল ইসলাম। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ছুটিতে যান কৃষি প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহীনুর আলম। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ছুটিতে যান কৃষি রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার আশরাফুজ্জামান ও জৈব প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হালিম।
এছাড়া ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়টির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কম্পিউটার প্রোগ্রামার আতিয়া সুলতানা যুক্তরাষ্ট্রে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সেকশন অফিসার তানজিনা ইসলাম অস্ট্রেলিয়া ও ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে খামার ব্যবস্থাপনা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু সাঈদ মো. জোবায়ের কানাডায় যান ছুটি নিয়ে।
ছুটি শেষ হওয়ার পর তাদের নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা কয়েক দফা ছুটি বাড়ান। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি তাদের ফেরাতে কঠোর বার্তা পাঠায়।
জবাবে অধ্যাপক সৈকত চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ঝর্না রানী সরকার, সহযোগী অধ্যাপক মো. তোহিদুল ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহীনুর আলম চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন।
তবে অধ্যাপক খন্দকার আশরাফুজ্জামান ও সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হালিম আবারও ছুটি বাড়ানোর আবেদন করেছেন।
ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর কর্মস্থলে না ফেরাদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে গঠিত কমিটির সদস্যসচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুমন কুমার দাস বলেন, যারা অব্যাহতি চেয়েছেন তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক পাওনা বিষয়ে হিসাব-নিকাশ চলছে। পাওনা আদায়ে প্রয়োজনে বিদেশি দূতাবাসকে জানানো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া বলেন, নতুন করে আর কারো ছুটি বাড়ানো হবে না। এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।