বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত হলেন না একজন প্রার্থীও

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফরিদপুর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফরিদপুর: যখন একটি পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরির জন্যেও এমএ পাস চাকরি প্রার্থীদের ভিড় লেগে যায়, সেখানে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় একজন প্রার্থীও উপস্থিত হননি। যদিও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চারজন প্রার্থী আবেদন করেন এবং তাদেরকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্রও সরবরাহ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে ওই স্কুলের এই নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে। বিষয়টি আমলে নিয়ে শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) এসএম শাহাদাত হােসেনকে নিযুক্ত করা হয় নিয়োগ পরীক্ষার তদারকির জন্য। আর এরপরই সেখানে নিয়োগপ্রার্থীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি পরীক্ষার দিনে। ল্যাব সহকারী পদ ছাড়াও পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া পদেও নিয়োগ পরীক্ষা ছিলো এদিনে। তবে উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের কোটা পূরণ না হওয়ায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদেও পরীক্ষা হয়নি। এ অবস্থায় একটি মাত্র আয়া পদেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে শুক্রবার কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে ৪ জন, পরিছন্নতাকর্মী পদে ৪ জন এবং আয়া পদে ১৩জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। শুক্রবারের ওই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তাদের প্রবেশপত্রও দেওয়া হয়। তবে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আয়া পদে ৮ জন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ২জন উপস্থিত হন। আর ল্যাব সহকারী পদে কেউই উপস্থিত হননি।

এর আগে এই নিয়ােগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে  কয়েকজন প্রার্থীদের নিকট থেকে মােটা অংকের উৎকাচ গ্রহণের অভিযোগ উঠে বিশেষ মহলের বিরুদ্ধে। চাহিদানুযায়ী অর্থ না পাওয়ায় কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর নিকট থেকে গ্রহণ করা ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার অভিযোগও উঠে।

কয়েকজন সদস্য অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষে নতুন কমিটির নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যই তফসিল ঘােষণা করা হয়েছে। এর আগেই নিয়োগের নামে মােটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা চালানো হয়। এর আগে এসব পদে নিয়ােগ প্রার্থীদের পরিবর্তন করার জন্য ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরপর তিনবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিলো। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে এই নিয়ােগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লখ করা হয় যে, পূর্বে যারা আবেদন করেছেন পুনরায় তাদের আবেদন করার প্রয়ােজন নই। তবে কয়েকজন নিয়ােগ প্রার্থী জানান, তারা নিয়োগ পরীক্ষার প্রবশপত্র পাননি।

এ অবস্থায় নিয়ােগ প্রক্রিয়া স্থগিতের জন্য  বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয়  পৌর কাউন্সিলরসহ ৮জন ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন। তাদর অভিযাগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমীন ইয়াসমিনকে দায়িত্ব দেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুধবার বিকেলে উভয়পক্ষকে নিয়ে শুনানি শেষে জেলা প্রশাসককে অবগত করার পর নিয়ােগ পরীক্ষা তদারকি করার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মাে. শাহাদাত হােসেনকে নিযুক্ত করা হয়। 

এ ব্যাপারে নিয়ােগ কমিটির সদস্য সচিব ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাে. জাহাঙ্গীর হােসেন নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগবিধি মেনেই তিনটি পদের মধ্যে পরিপত্র অনুযায়ী কাঙ্খিত সংখ্যক পরীক্ষার্থী উপস্থিত না হওয়ায় ল্যাব সহকারী ও পরিছন্নতাকর্মী পদ দু'টি শূন্য ঘােষণা করা হয়েছে। আর আয়া পদে নিয়ােগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওই পদ ১৩জন প্রার্থীর মধ্যে ৮জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় ৩জন উত্তীর্ণ হন। তিনজনের মধ্যে ডলি খানম নামে এক পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় তাকে নিয়ােগের জন্য সুপারিশ করেছেন নিয়ােগ কমিটি।

এব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট (এনডিসি) এ এস এম শাহাদাত হােসেন বলেন, তিনটি পদের মধ্যে একটি পদে নিয়ােগ সম্পন হয়েছে। বাকি দুইটি পদে প্রয়ােজনীয় সংখ্যক নিয়ােগ প্রার্থী উপস্থিত না হওয়ায় পদ দু'টি শূন্য ঘােষণা করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি - dainik shiksha কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের - dainik shiksha কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক - dainik shiksha আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা শিক্ষা ব্যবস্থার অসঙ্গতি ও প্রয়োজনীয় সংস্কার - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থার অসঙ্গতি ও প্রয়োজনীয় সংস্কার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024628639221191