বিদ্যালয়ের মাঠে গরু-ছাগলের হাট

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি |

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কোনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দৌলতপুর সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অবস্থান পাশাপাশি। দুই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। দুই বিদ্যালয়ের জন্য মাঠ রয়েছে একটি। প্রায় ৩৮ বছর ধরে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার দুই দিন সেই মাঠেই বসে গরু-ছাগলের হাট। এতে মাঠটি নোংরা হয়। খেলাধুলার পরিবেশ থাকে না।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, পশুর হাটটি অন্যত্র সরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানালেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৌলতপুর সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০০। অন্যদিকে কোনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ১৩০ জন শিক্ষার্থী।

সম্প্রতি দেখা গেছে বিদ্যালয়ের মাঠে অসংখ্য গরু-ছাগল। ক্রেতা-বিক্রেতায় মাঠটি গিজগিজ করছে। শত শত শিক্ষার্থী গরু-ছাগলের ভিড় ঠেলে বিদ্যালয়ের মাঠ দিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছে। মাঠজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে গোবর। উৎকট দুর্গন্ধে মাঠে দাঁড়ানোই দায়। 

সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সঞ্জিতা শর্মা ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মৌসুমি আক্তার জানায়, গরু-ছাগলের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ তো আছেই। এ ছাড়া ক্লাস চলার সময় লোকজন বিদ্যালয়ের বারান্দায় এসে ধূমপান করে। বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় বমি আসার উপক্রম হয়। দরজা বন্ধ করে ক্লাস করতে হয়।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাশেদা বেগম জানান, পশুর হাটটির কারণে বিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। অনেক অভিভাবক হাটের দিন মেয়েকে স্কুল পাঠান না।

বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার সহকারী শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায় বলেন, খেলাধুলা তো দূরের কথা, বর্ষায় হাঁটুসমান কাদামাটি পেরিয়ে স্কুলে আসতে হয় শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয়প্রধানের দায়িত্বে থাকা প্রধান সহকারী শিক্ষক কেশব কুমার চ্যাটার্জি বলেন, ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন কমিটি রেজল্যুশনের মাধ্যমে হাটটি প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেয়। প্রথম দিকে মাঠের এক কোণে ৫০ থেকে ৬০টি পশু নিয়ে হাট বসলেও ৩৮ বছরে ঠাকুরগাঁও জেলার অন্যতম বড় পশুর হাটে পরিণত হয়েছে এটি। হাটের কারণে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পরিবেশ ব্যাহতসহ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ২০১০ ও ২০১৭  খ্রিষ্টাব্দে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সদরের ইউএনওর কাছে লিখিত আবেদন করা হয় পশুর হাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য।  

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘হাট সরানো ও বসানো দুটিই আইনগত প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে সমাধানযোগ্য একটি পথ অবশ্যই খুঁজে বের করব।’ 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023519992828369