সোনাগাজী উপজেলায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে। এতে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাসহ কয়েক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের একমাত্র মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের জায়গা উদ্ধার করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
জানা গেছে, হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৩০৪ ও ৩০৫ দাগের স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান আহম্মদ এবং জাগীর আহম্মদ ২৫ শতক করে মোট ৫০ শতক ভূমি দলিল দিয়ে দান করেন। ওই দুটি দাগে ব্যক্তিমালিকানায় আরও জায়গা রয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবনটি ১০ শতক জায়গার মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া খেলার মাঠ, পুকুরসহ ৪০ শতক ভূমিদাতা সুলতান আহম্মদের নাতনি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা এবং জাগীর আহম্মদের নাতি মুসা খান।
মুসা খান পার্শ্ববর্তী ৩০৫ দাগে ভূমি দখল করে রাখলে ক্ষিপ্ত হয়ে ৩০৪ দাগের বিদ্যালয়ের মাঠ দখলে নেন পাশের ৩০৫ দাগের মালিক আবদুল ওহাব ও সামছুল হক গং। তবে এসব জায়গার মালিকানা দাবি করলেও কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তারা। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠটি জালের বেড়া দিয়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করেন আবদুল ওহাব, সামছুল হকসহ কয়েকজন। পেছনের অংশ দখল করেছেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও অদৃশ্য কারণে প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানান বিদ্যালয়ের সভাপতি আবদুল মান্নান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৈনিক সমাবেশ ও খেলাধুলার কোনো মাঠ নেই। এতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত মাঠ নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা দ্রুত সমাধান করে দেওয়া।
শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা ও মুসা খান ভূমির মালিকানা দাবি করে বিদ্যালয়ের মাঠ দখলে রাখলেও এ প্রতিবেদককে কোনো কাগজপত্র দেখাতে এবং মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিটলারুজ্জামান জানান, ভূমি নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি ও শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ পুনরুদ্ধারে এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, মাঠ দখল করার বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্নিষ্ট সবাইকে ডেকে ভূমির জটিলতা দ্রুত নিরসন করতে ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। ভূমির জটিলতা দূর হলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ সব ভূমি পুনরুদ্ধার করতে পারব।