দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার এক বিধবা ও অসুস্থ নারীকে সরকার থেকে চিকিৎসা অনুদানের টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে এক ছাত্রলীগ নেতা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর হুমকি দেয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত তানভীর রাজন উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের কসবাসাগরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জোতবানি ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ঢাকার একটি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা করেন তিনি। অন্যদিকে ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা খাতুন উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ফুলডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তার স্বামী মারা গেছেন। তিনি গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করেন। দীর্ঘদিন ধরে মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছেন।
আঞ্জুয়ারা অভিযোগ করেন, ‘পাঁচ মাস আগে ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন আমাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে আসেন। সেখানে তিনি এক দোকানদারের কাছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মধ্যে অসুস্থ লোকের নাম জানতে চান। পরে ওই দোকানদার তানভীরের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি আমাকে এমপির কাছ থেকে চিকিৎসার অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন। এ জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে এবং কাটলা বাজারে আমার মহাজন কাপড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একাধিকবার সব মিলিয়ে ১৪ হাজার ৬০০ টাকা নেন।’
আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘কয়েক মাস পর তানভীর রাজনকে চিকিৎসা অনুদানের টাকার কথা বললে তিনি বিভিন্নভাবে টালবাহানা করেন। পরে তার কাছে আমার টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেন। আমি তার বাড়িতে গিয়ে টাকার কথা বললে তার মা–বাবা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’
ভুক্তভোগী নারীর এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন। তিনি বলেন, ‘আমি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো ঘুষ নিইনি। দুই মাস আগে আমি তার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিলাম। গ্রামের কিছু মানুষ ওই নারীকে প্রভাবিত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। আমি কয়েক মাস ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি।’
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক বিধবা নারীর কাছ থেকে তানভীরের টাকা নেয়ার কথা লোকমুখে শুনেছি। বুধবার সকালে এ বিষয়ে উপজেলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে জরুরি সভা করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছেে। তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হবে।’