নীলফামারীতে তিস্তার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বুধবার বিকাল তিনটায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত সোমবার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেণ্টিমিটার ওপরে উঠে। এতে করে জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকায় পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ও শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের আট সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে। এরপর থেকে পানি কমতে শুরু করলে বুধবার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার, বেলা ১২টা পর্যন্ত আট সেন্টিমিটার এবং বিকাল তিনটায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচে নামে। এতেকরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তিস্তার ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, বুধবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করে। আমার ইউনিয়নে দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দী ছিল। এখন পর্যন্ত অর্ধেক পরিবারের বাড়িঘর থেকে পানি নেমে গেছে। এত মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ফের বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. একরামুল হক বলেন, পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি ও ছাতুনামা গ্রামে ৩০০ পরিবারের বাড়িতে এখনো পানি বিরাজ করছে।
পাউবো সূত্রমতে, গত ১২ জুন থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে বাড়া-কমার মধ্যে ছিল। ১৭ জুন সকাল ছয়টায় প্রথমবারের মত বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার বিকাল তিনটায় সেখানে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার এবং মঙ্গলবার বিকাল তিনটায় ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বুধবার বিকাল তিনটায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচে নামে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, বুধবার তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিকাল তিনটায় ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
এদিকে বন্যাকবলিতদের মাঝে ২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৭০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরেণের কাজ চলমান আছে বলে জানান ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন।