দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ানোর অভিযোগে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত দুই কলেজ শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা হলেন, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুস সালাম এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক রিবেন ধর। নির্বাচনী প্রশিক্ষণে এ দুই শিক্ষক বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
এ ঘটনার জেরে নির্বাচনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত আদেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বুধবার তাদের বরখাস্তের আদেশ চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা আক্তার নুর তাদের বরখাস্তের বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের পরিস্থিতি এবং দুই শিক্ষকের ভূমিকা ওইদিনই লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম। এর প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী আবদুস সালাম ও রিবেন ধরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।
সহকারী অধ্যাপক আবদুস সালাম এবং প্রভাষক রিবেন ধর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগরী ও তৎসংলগ্ন আসনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। নগরী ও তৎসংলগ্ন ছয়টি সংসদীয় আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও নগরীর একাংশ) আসনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম। প্রশিক্ষণে শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত ওই দুই শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে ওই দুই শিক্ষক রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের তৃতীয় গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা হওয়ার পরও তাদের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব কেনো দেয়া হয়েছে।
রিটর্নিং অফিসার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার কথা তাদের জানালে তারা এ নিয়ে নানা ‘অবান্তর’ মন্তব্য করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা এর সুরাহা না হলে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন না বলে জানিয়ে দেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার মধ্যে প্রশিক্ষণের আয়োজন ভণ্ডুল হওয়ার উপক্রম হয়। এরপর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বক্তব্য রাখতে উঠলে তাকে লক্ষ্য করেও দু’জন ‘অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিত’ মন্তব্য করেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গত ১১ জানুয়ারি সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ বিধি ১২ (১) অনুযায়ী তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। এর আগে, তাদের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়।
চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা আক্তার নুর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ১১ তারিখ অর্ডার হওয়ার পর উনাদের সেদিন থেকেই পরীক্ষা এবং ক্লাস থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
মন্তব্য জানতে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।