দীর্ঘদিন ধরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনের আড়ালে স্বর্ণ পাচার করছিলেন ইমিগ্রেশন পুলিশের এএসআই কামরুল ইসলাম মিলন। ডিউটি না থাকলেও গত সোমবার তিনি স্বর্ণ পাচার করতে বিমানবন্দরে আসেন। বিমানবন্দরের বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় যাত্রীবেশী এক চোরাকারবারির কাছ থেকে স্বর্ণবার পকেটে লুকিয়ে বের হওয়ার চেষ্টাকালে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়ায় তাকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করা হয়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের এএসআই মিলন। দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনের আড়ালে স্বর্ণ পাচার করেন তিনি। বিমানবন্দরসহ নিজ এলাকা সাতক্ষীরায় কোটিপতি মিলন নামেও তিনি পরিচিত বলে জানা গেছে।
স্বর্ণ পাচারের লোভ সামলাতে না পেরে সোমবার ডিউটি না থাকলেও বিমানবন্দরে আসেন মিলন। প্রবেশ গেটে সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা ও ইমিগ্রেশন পাস শো করে বিমানবন্দরের ৬ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় ঢুকে পড়েন তিনি। পাচারের উদ্দেশ্যে যাত্রীবেশী এক চোরাকারবারির কাছ থেকে তিনটি স্বর্ণবার পকেটে লুকিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় গোপন তথ্যে ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেনটিভ দল বিমানবন্দরের ৬ নম্বর বহির্গমন গেটে তাকে চ্যালেঞ্জ করে।
ঢাকা কাস্টম হাউসের ডেপুটি কশিনার অথেলো চৌধুরী জানান, অবস্থা বেগতিক বুঝে ওই এএসআই পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় বিমানবন্দর এপিবিএন ও গোয়েন্দা সদস্যরা তাকে জাপটে ধরেন। পরে তাকে কাস্টমসে নিয়ে তল্লাশি করে তার হেফাজত থেকে তিনটি স্বর্ণবার জব্দ করা হয়। বিমানবন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরায় মিলনের স্বর্ণ পাচারের দৃশ্য শনাক্ত করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তারা আরও জানান, বিমানবন্দরে স্বর্ণ পাচার ছাড়াও আদম পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে বলে গোয়েন্দা সূত্র জানায়।
বিমানবন্দর থানার ওসি নুরে আজম মিয়া জানান, সম্প্রতি স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে সিভিল এভিয়েশন, বিমানসহ বিভিন্ন সংস্থার একাধিক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি ও ডিবি পুলিশ।