বিরিয়ানিতে চেতনানাশক ওষুধ ছিটিয়ে রাখেন দুর্বৃত্তরা। আর সেই বিরিয়ানি খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দম্পতি।
এই সুযোগে বাসায় ঢুকে টাকা-স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার (১০ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে কেরানীগঞ্জের আটি নিমতলী ছোট বাওয়াল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়া দম্পতিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী দম্পতি হলেন - জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ করা নাসরিন সুলতানা মনি (২৪) ও ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র এরশাদ আবির (২৪)।
রোববার (১১ জুন) দম্পতির ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া বলেন, তাদের দুজনকেই মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তদন্ত করছে।
বাসায় রান্না করা বিরিয়ানি খাওয়ার পর অচেতন হন এ দম্পতি জানিয়েছেন তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা জরিনা খাতুন।
তিনি সম্পর্কে ভুক্তভোগী নাসরিনের নানি।
জরিনা খাতুন বলেন, কেরাণীগঞ্জের ওই বাড়িটি নাসরিনের বাবার বাড়ি। আমি নাসরিনের নানি। গত মাসের ৮ তারিখ নাসরিন ও আবিরের বিয়ে হয়। গতকাল আবির ময়মনসিংহ থেকে বেড়াতে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। রাতে নাসরিনের মা মেহেরুন্নেসা তাদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করেন। এরপর নাসরিনের মা মেহেরুন্নেসা এবং তার ছোট বোন তনু বিরিয়ানি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং রান্নাঘরে নাসরিন এবং এরশাদের জন্য বিরিয়ানি রেখে দেন। রাত ১১ টার দিকে রান্নাঘর থেকে বিরিয়ানি এনে খান নাসরিন ও আবির। এর পরে তারা অসুস্থ অনুভব করে। একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দুইটার দিকে তাদের বাড়ির তিন পাশের গ্রিল কেটে ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে। তখন নাসরিনের মা ও ছোট বোন ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এরপর আলমারি, শোকেস ভেঙে ৪-৫ লাখ টাকা, কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তারা ভাঙা গ্রিল দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের বাসায় যায়। এরপর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এদিকে হাসপাতালে এরশাদ আবির কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর বলেন, গতকাল (শনিবার) আমি ময়মনসিংহ থেকে কেরানীগঞ্জে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসি। রাতে যখন রান্নাঘর থেকে বিরিয়ানি এনে দুজন খাই, তখনই বিরিয়ানি তেতো লাগছিল। সেজন্য অল্প একটু খেয়েই রেখে দিই। এর কিছুক্ষণ পরই প্রথমে নাসরিন মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। এরপর আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা কখন বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আর পরবর্তীতে বাসায় কি হয়েছে তা কিছুই জানি না।
তিনি জানান, তার মানিব্যাগে ২৫ হাজার টাকা ও ২টি পেনড্রাইভ ছিল। যেই পেনড্রাইভে তার অনেক গোপন তথ্য ছিল। সেগুলোও লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
রান্না ঘরের জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রথমে বিরিয়ানিতে চেতনানাশক ছিটিয়ে রেখে দিয়েছিল বলে ধারণা তার।