ভারতের লোকসভায় আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ভালোভাবেই উতরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও সংসদে মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং মিত্রদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তার সরকার ভোটে হারবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। তারপরও এই ভোটকে ‘ভারতের মানহানি’ করার জন্য বিরোধী দলগুলোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন মোদি।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদি বক্তৃতা দেওয়ার পর সরকারদলীয় এমপিদের কণ্ঠভোটে খারিজ হয়ে যায় এই প্রস্তাব।
বিরোধী নেতারা অবশ্য বলছেন, মণিপুরে জাতিগত সংঘাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতে বাধ্য করার জন্যই ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল।
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে বিজেপির শাসন চলছে। মে মাসে আদালতের এক রায় নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি ও উপজাতি কুকি সংখ্যালঘুদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৫০ জনেরও বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
শুরুতে চুপ থাকলেও দুই নারীকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানোর ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মোদি। জানান, দোষীদের অবশ্যই সাজার আওতায় আনা হবে।
২০ জুলাই শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তারা দাবি করে, এই সহিংসতার বিষয়ে ভাষণ দেবেন মোদি।
বৃহস্পতিবার অনাস্থা ভোটের আগে মোদি তার একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দেওয়া ভাষণে মণিপুরের বিষয়টি না আনলে বিরোধীরা সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে।
তবে বক্তৃতার শেষের দিকে মোদি কথা বলেন মণিপুর ইস্যুতে। তিনি বলেন, ‘ফেডারেল এবং রাজ্য সরকার রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এক হয়ে কাজ করছে।’
মোদি বলেন, ‘আমি মণিপুরের জনগণকেও বলতে চাই, দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে। আমরা এক হয়ে এই চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজে বের করবো।’
ভাষণে মণিপুর নিয়ে ‘রাজনৈতিক খেলার জন্য’ জন্য বিরোধীদের অভিযুক্ত করেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘তাদের ভারতের জনগণের ওপর, ক্ষমতার ওপর আস্থা নেই। তারা এই অনাস্থা ভোট দিয়ে ভারতীয়দের আত্মবিশ্বাস ভাঙার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে।’
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পর এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটলো মোদি সরকারের সঙ্গে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এক আইনপ্রণেতা দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যকে একটি বিশেষ বিভাগের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। ১২ ঘণ্টা বিতর্কের পর এটি খারিজ হয়ে যায়।
সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি